বাংলা ইসলামিক বই ঈসা ইবনু মারইয়ামঃ ড. আলী মোহাম্মদ সাল্লাবি

 'পৃথিবীর বুকে এমন কোনো গ্রন্থ নেই যা ঈসা মাসিহ আ. এবং তার পরিবারকে কুরআনুল কারিমের চেয়ে বেশী মর্যাদা ও সম্মান দান করেছে৷'

ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবির এ কথাটি নিরেট সত্য৷ সেন্ট এজিডো সংস্থার পক্ষ থেকে দাওয়াত পেয়ে একবার ইতালি সফর করেন ড. আলি মুহাম্মাদ সাল্লাবি৷ ভ্যাটিক্যান সিটির গির্জায় অনুষ্ঠিত সম্মেলনে সেদিন তিনি আলোচনা করেন ইসলামে শান্তির মর্মকথা নিয়ে৷ প্রসঙ্গত তার আলোচনায় আসে ঈসা আ. ও তাঁর কুমারী মহীয়সী মাতা মারইয়াম আ.এর নিকট শান্তির গুরুত্ব, মর্যাদা ও অবস্থান নিয়ে সুস্পষ্ট বর্ণনা।

এ প্রসঙ্গে তিনি ঈসা আ. ও মারইয়াম আ. সম্পর্কিত কুরআনের কয়েকটি আয়াত বর্ণনার পর আচমকা দেখতে পান, যে মহিলাটি তার বক্তব্য অনুবাদ করছিলেন, তিনি অঝোরে কাঁদছেন৷ কান্নার সেই দৃশ্যপট থেকেই ড. সাল্লাবির মনে জেগে উঠে ঈসা আ. ও তাঁর মাতা মারইয়াম আ. এর সিরাত বা জীবনচরিত বিষয়ক কুরআনের আয়াতগুলো নির্বাচন করে একটি আধুনিক ধারার গ্রন্থ রচনা করার ভাবনা৷ যা হবে আধুনিক যুগের প্রাণ ও মানবতার সঙ্গে অত্যন্ত জুৎসই৷


মোটকথা, ড. আলি সাল্লাবি রচিত 'ঈসা ইবনু মারইয়াম' গ্রন্থটির সকল তথ্যের সূত্র ও উৎস হচ্ছে পবিত্র কুরআনুল কারীম। গ্রন্থের শুরুতে এনেছেন ঈসা আ.এর জন্মভূমি ফিলিস্তিনের ঐতিহাসিক শেকড় সংক্রান্ত আলোচনা৷ এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে তিনি উল্লেখ করেছেন পবিত্র কুরআনে ঈসা আ. সম্পর্কিত সকল আয়াত ও এর বিশদ ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ৷ এ সম্পর্কিত একটি আয়াতও তিনি বাদ রাখেননি৷

প্রাসঙ্গিক বিভিন্ন শিরোনামের আলোকে তিনি এ সকল আয়াত উল্লেখ করেছেন৷ এরপর তিনি মনোযোগী হয়েছেন ঈসা আ. এর মুজিজা ও তার উর্ধ্বারোহণ সংক্রান্ত আলোচনায়৷ এবং সমাপ্তি টেনেছেন নবিজির সময়কালে নাজরানের খ্রিস্টানদের আলোচনা দিয়ে৷ এর মধ্য দিয়েই চলে এসেছে ঈসা আলাইহিস সালাম সংক্রান্ত সকল জরুরী ও প্রয়োজনীয় আলোচনা৷

ড. আলি সাল্লাবির বিশ্লেষণী ক্ষমতা সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই৷ মুসলিম ইতিহাস নিয়ে ধারাবাহিক লেখালেখির পর তিনি বেশ কজন নবি-রাসুলদের বিস্তারিত, প্রামাণ্য জীবনীও লিখেছেন৷ ঈসা ইবনু মারইয়াম সেই সিলসিলারই একটি বই৷ পাঠকের জন্য বইটি যে উত্তম উপহার হতে যাচ্ছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷

মুহাম্মাদ পাবলিকেশন বইটির বাংলা অনুবাদ প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছে। অনূদিত হয়ে আসার পর বইটির নিরীক্ষণ শেষ করি প্রায় দুই-মাস আগে৷ বইটি এখন প্রকাশের দ্বারপ্রান্তে৷ শীঘ্রই হয়তো প্রি-অর্ডার শুরু হবে৷ পুরো বইটি দক্ষহাতে অনুবাদ করেছেন জামিআ রাহমানিয়া আরাবিয়ার ইফতা বিভাগের সহকারী মুশরিফ মুফতি মাহমুদুল হাসান সাহেব৷ আমরা যখন সেখানে উলুমুল হাদীস পড়ি তখনও তিনি ইফতা বিভাগের সহকারী মুশরিফ ছিলেন৷ সে হিসেবে আমি তার ছাত্র পর্যায়েই পড়ি৷ অনুবাদে তিনি যথেষ্ট মুন্সীয়ানার পরিচয় দিয়েছেন৷
- Mahdi Hasan
Next Post Previous Post