স্বাগতম ২০২৪ ইতিহাসের পাতায় ২০২১ সাল : আসুন জানি ২০২০ সাল কেনো উত্তম ছিলো

২০২০ সালের বিভিন্ন ঘটনার উপকার অপকার : নতুন বছর ২০২১ এবং ২০২৪ সাল

২০২০ সালে অনেক কিছুই হয়ে গেছে। বছর শুরুতেই পৃথিবীর নানা প্রান্তের নানা খবর সবাইকে চিন্তার মাঝে ফেলে দিয়েছিলো। কিন্তু যখন সব ছাপিয়ে করোনা আক্রমণ করলো তখন আগের সব চিন্তা উধাও! দুনিয়া তখন শুধু করোনা আর লকডাউন কোয়ারেন্টাইন নিয়ে ব্যস্ত!!

আমি মুসলিম, অধিকাংশ বাঙালি মুসলিম এজন্য এই লেখা যারা পড়ছে বুঝা যায় তাদের মোটামোটি সবাই মুসলিম। এদিক থেকে ইসলামের হুকুম অনুযায়ী সময় কে গালি দেয়া বা খারাপ বলা হারাম সেটা আমি মেনে চলি, চলতে চাই। অনেকেই আছে ২০২০ সালকে গালি দিচ্ছে, অভিশপ্ত বলছে ইত্যাদি।

আসুন দেখি ২০২০ সাল কেনো কিভাবে ২০০০ সালের পর থেকে এখন পর্যন্ত উত্তম একটি বছর।  ( যেসকল মুসলিম পরিবারের সদস্য মারা গেছে তাদের প্রতি সমবেদনা, সম্মান রেখে)

২০২০ সালের ইতিহাস

অপচয় কমে গেছে ঃ

 সারা বছর বিভিন্ন হোটেলে রেস্টুরেন্টে কত শত কেজি খাবার, রান্না করা খাবার ফেলে দিয়ে অপচয় হতো তার খবর আমরা বিভিন্ন সময়ে দেখেছি। কিন্তু এই বছর সেটা অনেককককক কমে গেছে। যেহেতু হোটেল ই বন্ধ সেহেতু অপচয় হবে কোথায় করবে কে!!?? 

সিনেমা বন্ধ ঃ 

সারাবছর পুরা পৃথিবী তে কয়েক হাজার এর বেশি সিনেমা মুক্তি পায়, সেগুল কোটি কোটি মানুষ টাকা খরচ করে টিকেট কিনে দেখতো!
এক ভারতেই মনে হয় শত শত ছবি রিলিজ হয় প্রতি বছর। কিন্তু ২০২০ সালে সব বলতে গেলে সবই বন্ধই ছিলো। হারাম নাচ গান আইটেম সং ব্লা ব্লা এসব ধরতে গেলে নামতে পারেনি বাজারে!!
মানুষ ও টিকেট কিনে মুভু দেখে টাকা আর সময় নষ্ট করেনি।

চিন্তার ব্রেক পাওয়া ঃ 
অনেকে আছে যারা অনবরত দৌড়াতে দৌড়াতে জীবন শেষ করে দিলেও নিজেদের নিয়ে একটু  ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তার সময় তারা পান না। করোনা লকডাউন এসবের কারনে লম্বা ছুটিতে অনেকে জীবনের দৌড়ে কিছুটা ছুটি পেয়েছেন , অনেকে নতুন করে জীবনের উদ্দেশ্য , মানে পথ খুজে পেয়েছেন। 

করোনায় মানুষ চেনা ঃ 

করোনার  ভয়ে মাকে বস্তায় করে জঙ্গলে ফেলে আসার ঘটনা এই আমাদের বাংলাদেশে ঘটেছে!! স্বামীর জ্বর আসাতেই করোনার ভয়ে স্ত্রী কন্যা এরা বাপ কে ঘরে ঢুকতে দেয়নি অথচ ঐ বাবার বাড়ি, সারাজীবন বাবা তাদের জন্যই কষ্ট করছে, কাজ করতে গিয়ে জ্বর আসছে.....লোকটা সবই করছে তার পরিবারের জন্য আর দিনশেষে সেই স্ত্রী সন্তান ই তাকে ফেলে দিছে।
বোনের বাড়িতে সেই লোক স্ট্রক করে মারা যায়। স্ত্রী সন্তানের কাছে এমন ব্যাবহার পাওয়ার পর কয়জন মানুষ স্ট্রক না করে থাকবে??

মাদ্রাসার ছাত্র জঙ্গি, হুজুর জঙ্গি আর এই জঙ্গিরাই নিজেদের জীবন বাজি রেখে করোনা রোগীদের সেবা করা, মৃতদের জানাজা কবর দেওয়া সব করছে।

আপন সন্তান জঙ্গলে ফেলে চলে যায়, বাড়ি থেকে বের করে দেয় আর মাদ্রাসার জঙ্গি হুজুররা তাদের আপন করে নেই!!

এরপরেও মানুষ চিনতে পারছেন না? 

প্রেম পিরিতি কমে গেছে ঃ 
অনেকে বলবেন নেটে উল্টা পালটা প্রেম আরো বাড়ছে লকডাউন এর জন্য! কিন্তু লকডাউন না থাক্লেও তো এসব নেটে প্রেম চলতই! করোনা লকডাউন এর কারনে ২০২০ সালে পার্কে পার্কে বাচ্চা উৎপাদনে কিছুটা হলেও ভাটা পড়ছে।

পৃথিবী বিশ্রাম পাইছে ঃ 

হইতো দেখে থাকবেন ওয়ার্ল্ড এর বিভিন্ন জায়গা তাদের নিজস্ব রুপ ফিরে পেয়েছিলো লকডাউনের ছুটিতে। আমাদের কক্সবাজারেই তো কত উন্নত পরিবেশ তৈরি হইছিলো কিছুদিন সব বন্ধ থাকায়।
আমার মনে হয় করোনা চলে গেলেও বছরে কিছুদিন পুরা দুনিয়া একসাথে একবারে বন্ধ রাখা দরকার।


এমন আরো অনেক অনেক ঘটনা আরো অনেক কথা বলা যাবে ২০২০ সাল নিয়ে। এবার দেখি কিছু উল্টা দিক।

উল্টা দিক গুলোর জন্য আমরাই দায়ি। 

গরিবদের অবস্থা খারাপ ঃ
হ্যাঁ, ২০ সালে কাজ না থাকায় গরিবদের অবস্থা খুব খারাপ। ফকির ভিক্ষা নিবে কিন্তু ভিক্ষা দিবে কে? কেউ তো বাইরে বের হয় না টাইপ অবস্থা। 

বিভিন্ন কোম্পানি বন্ধ, বেতন নাই সব মিলায়ে অর্থনৈতিক ভাবে গরিব, মধ্যবিত্ত এরা বেশ চাপে পড়ছে ২০২০ সালে।

রমজান মাস ঃ 
আমি যখন ডিসেম্বরে এই লেখা লিখছি তখন ও করোনা আছে, মানুষ মরছে!! কিন্তু সব খোলা!! মানুষ মাস্ক ছাড়া বের হচ্ছে, লাগালাগি করে চলছে! এসবে কোন সমস্যা নাই কিন্তু করোনা আসাতে সবাই  জেনো উঠে পড়ে লাগলো কিভাবে মসজিদ বন্ধ করা যায়, কিভাবে রমজান মাসে মুসলিমদের মসজিদ থেকে দূরে রাখা যায়!!
 ভাব খানা এমন করোনা শুধু মসজিদেই আছে!! নাউজুবিল্লাহ!

পূজা গেলো, বিভিন্ন মিছিল গেলো, ফাউল ফাউল ইস্যু তে মানব বন্ধন হচ্ছে। সব চলে কোথাও কোন চুলের সাংবাদিক টিভি চ্যানেল এর করোনা নিয়ে চিন্তা নাই! তাদের সব চিন্তা মসজিদ আর মুসলিমদের নিয়ে!!

এভাবে করে ২০২০ সালের রমজান মাসটা আমাদের লাইফ থেকে মুছে দিলো। এখন তো বুঝা যাচ্ছে তখন মসজিদ নিয়ে বাড়াবাড়ি সরকারে, মিডিয়ার ভুল ছিল। কিন্তু বুঝে কি লাভ, এই রমজান মাস তো আর পাওয়া যাবে না। 

অনেকে রমজানেই মূল বিজনেস করে, তাদের ও লস। চিলে কান না নিলেও আমরা চিলের পিছে দৌড় দেওয়া জাতি এখন বুঝতিছি আগের বাড়াবাড়ি ভুল ছিলো। বাড়াবাড়ি ছাড়াছাড়ি না করে ব্যাল্যান্স করে চলা উচিত ছিলো। 
Next Post Previous Post