বাংলা ইসলামিক বই - আয়নাঘর | মূল - ড. ইয়াদ কুনাইবী | লিংক

ইসলামিক বই - আয়নাঘর | ড. ইয়াদ কুনাইবী | ইলমহাউস আসিফ আদনান PDF

শুরুতেই বলে নেই এই বই নতুন একটি বই তাই PDF খুঁজার চেয়ে একদিনের আড্ডার টাকা দিয়ে বই টি কিনে পড়ুন। ইসলামিক রিলেটেড বই  ই তো , তাই লস নাই।
জানতে পারবেন অনেক কিছু।

এই বই এর সাথে চিন্তাপরাধ ও মুক্ত বাতাসের খোঁজে বই ২ টাও পড়তে পারেন।
 মুক্ত বাতাসের খোঁজে বই এর পিডিএফ পাওয়া যায় যদিও কিনে পড়া ভালো।

এ দুনিয়াতে আমরা এসেছি অল্প কিছু সময়ের জন্য। এক অর্থে আমরা এখানে আটকা পড়ে আছি। আমাদের আসল বাড়ি, আসল ঠিকানা জান্নাত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে। রাসূল -এর হাদিসেও এসেছে,
‘দুনিয়া মুমিনের জন্য কারাগার আর কাফিরের জন্য জান্নাত।’

আয়নাঘর | মূল - ড. ইয়াদ কুনাইবী

দুনিয়ার কারাগারে বন্দী এই আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগগুলো হলো আমাদের গুনাহগুলো। সাক্ষীপ্রমাণ সব প্রস্তুত। এখন কেবল রায় দেয়ার অপেক্ষা। আত্মপক্ষ সমর্থনে আমাদের পক্ষে কেবল এটুকু আছে যে আমরা তাওহিদবাদী। আমরা আল্লাহর একত্বে বিশ্বাসী। আমরা মুওয়াহ্‌হিদ।

কাজেই আমাদের যদি তাওহিদে সমস্যা থাকে, তাহলে শাস্তি নিশ্চিত। আর সেই শাস্তির মেয়াদ নিয়ে প্রশ্ন করা অনর্থক।
মামলা খারিজ হবার একমাত্র উপায় আন্তরিক তাওবাহ।

ইবনুল ক্বাইয়্যিম বলেছেন,
চিরন্তন জান্নাতে এসো, যেখানে ছিল তোমার প্রথম নিবাস। সেখানেই তাঁবু খাটানো আছে তোমার জন্য। কিন্তু আজ আমরা বন্দী শত্রুর হাতে। কী মনে হয়? আমরা কি পারব নিরাপদে ঠিকানায় ফিরতে?




রাজারা জনগণের ধনসম্পদ, সহায়-সম্বল ‘বৈধভাবে’ লুট করে। দেনার বোঝা কাঁধে নিয়ে আত্মহত্যা করে মানুষ। শেয়ারবাজারে সর্বস্ব হারিয়ে ঝাপসা চোখে ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়ে মধ্যবিত্ত। বাধ্য হয়ে ডাস্টবিনে কুকুরের পাশে উবু হয়ে বসে খাবারের খোঁজ করে শিশু। বেকার হয়ে ডিগ্রি হাতে দ্বারে দ্বারে ঘুরে বেড়ায় যুবক। নিজ ভিটে থেকে বিতাড়িত হয় কৃষক। পঙ্গু হয়ে যায় অর্থনীতি। কাল যে সম্মানিত ছিল আজ সে হয় লাঞ্ছিত।

অন্যদিকে রাজা আর তার সাঙ্গপাঙ্গরা গাড়ি-বাড়ি, পোশাক থেকে শুরু করে খাবার-দাবার, এমনকি হাতঘড়ির পেছনেও ওড়ায় কোটি কোটি টাকা।

এই রাজারাই মুসলিম উম্মাহর ধন-সম্পদ তুলে দেয় উম্মাহর শত্রুদের হাতে। লুট করা সেই টাকা দিয়ে বানানো মিসাইলের আঘাতে ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয় মুসলিম শিশুদের দেহ।

এই হলো আমাদের আজকের বাস্তবতা।
.
বই - আয়নাঘর
মূল - ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদ - ইলমহাউস অনুবাদক টিম
সম্পাদনা - Asif Adnan
পৃষ্ঠা সংখ্যা - ২০০
নির্ধারিত মূল্য - ২০০ টাকা
অর্ডার করার জন্য যোগাযোগ করুন এই পেইজে -
নিদা পয়েন্ট - https://www.facebook.com/nidapointbd/

অথবা নিচের নাম্বারে - +880 1716-122518



পরিবার আজ উম্মাহর শেষ দুর্গ। আমাদের শত্রুরাও এটা জানে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল, রাষ্ট্র, সমাজ - সব জায়গা থেকে ইসলামকে অনেকাংশে সরিয়ে ফেলতে সফল হয়েছে তারা। কিন্তু আমরা এখনো নিজ ঘরের চার দেয়ালের ভেতরে পরিবারকে রক্ষা করতে এবং পারিবারিক বন্ধনগুলো দৃঢ় রাখতে সক্ষম। তাই তারা সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে, এ দুর্গ ভেঙে ফেলার। যদি এ দুর্গ টিকে থাকে তাহলে একদিন শত্রুর সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দিয়ে হয়তো এর ভেতর থেকেই জেগে উঠবে উম্মাহর পুনর্জাগরণের মহিরুহ। 
.
কিন্তু তার জন্য মেনে চলতে হবে আল্লাহর নির্ধারিত সীমাগুলো। নিজের পরিবারের হকের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করতে হবে। তা না হলে শত্রুর চক্রান্তের চেয়ে আমাদের অবহেলাই আরও বড় বিপর্যয় ডেকে আনবে।
.
সন্তানদের অবহেলা করবেন না। তাদের উপেক্ষা করবেন না। তারা বয়সে বড় হচ্ছে। তাদের শরীরগুলো বেড়ে উঠছে। কিন্তু দ্বীনের ব্যাপারে বাড়ছে দুর্বলতা। তারা ভালো খাওয়া-দাওয়া করছে, কিন্তু তাদের হৃদয়গুলো ভালোবাসা, স্নেহ আর প্রশান্তির জন্য পিপাসার্ত।

আর মনে রাখবেন, সময় এখন আর আগের মতো নেই।
.
বই - আয়নাঘর
মূল - ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদ - ইলমহাউস অনুবাদক টিম
সম্পাদনা - Asif Adnan
পৃষ্ঠা সংখ্যা - ২০০
নির্ধারিত মূল্য - ২০০ টাকা
অর্ডার করার জন্য যোগাযোগ করুন এই পেইজে -
নিদা পয়েন্ট - https://www.facebook.com/nidapointbd/

অথবা নিচের নাম্বারে - +880 1716-122518



কথাগুলো আমরা সবাই শুনেছি। যখনই কোনো কাফের রাষ্ট্র বা মুরতাদ শাসক ইসলামের বিরুদ্ধে নতুন কোনো যুদ্ধ শুরু করে, কেউ-না কেউ বলে ওঠেন, 
.
নিঃসন্দেহে ইসলাম বিজয়ী হবে। আল্লাহু 'আলা কুল্লি শাইয়্যিন ক্বাদীর।
তারা যা-ই করুক না কেন, কখনোই আল্লাহর দ্বীনের আলোকে নেভাতে পারবে না।
.
ওপরের প্রতিটি কথা সত্য। কোনো সন্দেহ নেই। সহিহ হাদিসে এ উম্মাহর বিজয়ের সুসংবাদ দেয়া হয়েছে। হাদিসে এমন সব বিজয়ের সুসংবাদ এসেছে, যা এখনো অর্জিত হয়নি। আমরা সেই বিজয়ের জন্য অপেক্ষা করছি। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তাঁর এ দ্বীনকে বিজয়ী করবেন।

ইসলামের বিরুদ্ধে আজ যারা চক্রান্ত করছে দুনিয়াতে তাদের স্থান হবে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে, আর আখিরাতে জাহান্নামের আগুনে। এক মুহূর্তের জন্যেও এ নিয়ে আমরা কোনো সন্দেহ করি না।

.
হ্যাঁ, ইসলাম বিজয়ী হবে। প্রশ্নটা এখানে না। প্রশ্ন হলো, বিজয় যখন আসবে, তখন তুমি বা আমি কোথায় থাকব? আমাদের অবস্থান কোথায় হবে? আমরা কি বিজয়ী কাফেলার অংশ হব? নাকি আমাদেরও জায়গা হবে ইতিহাসের আস্তাকুঁড়ে?



জিপিএস
ধরুন, আপনি ঘুরতে বেড়িয়েছেন। হাতে অচেনা এক শহরের ম্যাপ। অথবা হাল আমলের বহুল ব্যবহৃত জিপিএস। যাচ্ছেন ছোটবেলার জিগরি দোস্তের সাথে দেখা করতে। ম্যাপ কিংবা জিপিএসের ওপর ভরসা আছে আপনার। আপনি জানেন, গন্তব্যে পৌঁছানোর পথ সেখানে ঠিকঠাক দেখানো আছে।
.
এখন আপনি কী করবেন?
.
আপনি দশ রাস্তা ঘুরবেন না। সবচেয়ে ভালো রুট খুঁজে বের করার জন্যে সময় নষ্ট করবেন না; বরং নিশ্চিন্তে জিপিএস ফলো করবেন। আর এভাবে অচেনা শহরের, অচেনা গলি থেকেও হারানো বন্ধুকে খুঁজে পেতে খুব একটা কষ্ট হবে না।
.
কিন্তু ম্যাপ বা জিপিএস সঠিক পথ দেখাচ্ছে কি না, তা নিয়ে যদি আপনার সন্দেহ থাকে? তাহলে কী হবে?
.
সে ক্ষেত্রে আপনি খুব একটা দ্রুত এগোবার সাহস করবেন না। সতর্কতার সাথে সামনে এগোবেন, থেমে থেমে। কিছুক্ষণ পরপর গাড়ি থামিয়ে পথচারীদের প্রশ্ন করবেন। আপনার মন থাকবে বিক্ষিপ্ত। আপনার গন্তব্য নিয়ে, কিংবা দেখা হলে বন্ধুকে কী বলে চমকে দেবেন, তা নিয়ে ভাবার ফুরসত হবে না। সময়টা কাটবে সংশয়, অস্থিরতা আর দুশ্চিন্তায়। কারণ, আপনি নিশ্চিত না আপনি সঠিক পথে আছেন কি না।
.
ওপরের উদাহরণের সাথে কুরআনের মিল কোথায় জানেন?
দেখুন আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কী বলেছেন। তিনি বলেন :

وَاسْتَعِينُوا بِالصَّبْرِ وَالصَّلَاةِ ۚ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلَّا عَلَى الْخَاشِعِينَ ﴿٤٥﴾ الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلَاقُو رَبِّهِمْ وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ
“যারা নিশ্চিত বিশ্বাস করে যে, তাদের প্রতিপালকের সঙ্গে তাদের সাক্ষাৎ ঘটবেই এবং তাঁরই দিকে তারা ফিরে যাবে।” [তরজমা, সূরা আল-বাক্বারা, ৪৫-৪৬]
.
দ্বীন ইসলাম নিয়ে সন্দেহে ভোগা মানুষ কখনো নিজেকে নিয়ে, নিজের পথ নিয়ে নিশ্চিত হতে পারে না। সে সব সময় দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে, ‘আসলেই কি আমি সঠিক পথে আছি?’
.
যখনই সে কোনো গুনাহ ছাড়ার চেষ্টা করে, শয়তান তাকে এসে বলে: ‘তুমি কি জান্নাতের জন্য এ কাজটা ছাড়ছ? যদি জান্নাত বলে কিছু না থাকে? তাহলে তো এপার-ওপার সবই হারাবে। ভালোমতো ভেবে দেখো কিন্তু!’
.
কিন্তু যারা আল্লাহর প্রতি বিনীতভাবে আত্মসমর্পণ করেছে তাদের এ সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় না। এ কৌশলে শয়তান তাদের সাথে পেরে উঠতে পারে না।

দেখুন সূরা বাক্বারার এই আয়াতে আল্লাহ  বলছেন, ‘যারা বিশ্বাস করে...।’
.
কুরআনে যখন ‘বিশ্বাস করে’ ( يظنون ) আসে তখন এর দ্বারা সাধারণত ‘নিশ্চয়তা’ বোঝানো হয়। অর্থাৎ আল্লাহ এখানে ওইসব বান্দাদের কথা বলছেন, যারা নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করে তারা তাদের রবের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। এবং তাঁর কাছেই ফিরে যাচ্ছে। এমন মানুষেরা নিশ্চিত জানে যে আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে একদিন সব কাজের হিসেব দিতে হবে। সেদিন তিনি হয় জান্নাতের মাধ্যমে পুরস্কৃত করবেন অথবা শাস্তি দেবেন জাহান্নামের আগুনে।
.
একজন মানুষ যখন এ কথা বিশ্বাস করে, সে যখন এই সাক্ষাতের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে যায়, তখন তাঁর জন্যে আন্তরিকভাবে ইবাদাত করা ও গুনাহ থেকে সরে আসা সহজ হয়ে যায়।
.
প্রিয় পাঠক, কোনো ইবাদাতের ব্যাপারে যখনি আলসেমি লাগবে, নিজেকে প্রশ্ন করবেন :

আমি কি জান্নাতের জন্য অপেক্ষা করছি না?

আমি কি জান্নাতের অস্তিত্ব নিয়ে নিশ্চিত না?

আল্লাহর হুকুম মানাই যে জান্নাত পাওয়ার উপায় তা নিয়ে কি আমার মনে কোনো সন্দেহ আছে?

তাহলে কেন আমি অলসতা করছি? অবহেলা করছি?
.
কাজেই, নিজের ঈমানকে শক্ত করুন, সব সংশয়কে ছুড়ে ফেলে ছুটে যান আল্লাহর রাস্তায়। অনর্থক সংশয়, সন্দেহে সময় নষ্ট করার প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন নেই দশ রাস্তা ঘোরার। প্রয়োজন নেই অন্য পথ আর পদ্ধতি নিয়ে মাথা ঘামাবার। আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের সাথে সাক্ষাতের সেই অসামান্য মুহূর্তের জন্যে প্রস্তুত করুন নিজের সমস্ত অন্তরাত্মাকে। যেমনটা আমাদের প্রিয়নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন:

من خاف أَدْلَجَ، ومن أَدْلَجَ بلغ المنزلَ، أَلا إن سِلْعَةَ اللهِ غاليةٌ، أَلا إن سِلْعَةَ اللهِ الجنة

“যে ব্যক্তি ভয় করে, সে সাহরীর আওয়্যাল ওয়াক্তে (প্রথম প্রহরে) সফর করে। আর যে ব্যক্তি সাওয়ারীর আওয়্যাল ওয়াক্তেই সফর করে সে তার মানযিলে পৌছে যায়। জেনে রাখ, আল্লাহর পন্য খুবই দামী। শোন, আল্লাহর পণ্য সামগ্রী হল জান্নাত।” 





আজ অনেকেই মনে করেন শরীয়াহ শাসন দিয়ে বর্তমান সময়ের চাহিদা মেটানো যাবে না। অনেকে বিশ্বাস করেন পরিপূর্ণভাবে শরীয়াহ অনুসরণ করা আজ সম্ভব না। আধুনিক সময়ে রাষ্ট্র শরীয়াহ দিয়ে চলবে, এ চিন্তাটাই অনেকের কাছে অবাস্তব। তারা মনে করে শরীয়াহ যুগের চাহিদা মেটাতে অক্ষম। কেউ কেউ এটা সরাসরি বলে ফেলে। আর কেউ কেউ এ চিন্তাগুলো প্রকাশ করে নানান প্রশ্নের মোড়কে। 
.
এ ধরনের মানুষদের অনেকেই মনে করেন শরীয়াহতে অসম্পূর্ণতা আর কমতি আছে। আর এগুলো মেটানোর জন্য গণতন্ত্রের মতো আদর্শগুলো থেকে কিছু কিছু জিনিস ধার করা দরকার।
নিঃসন্দেহে এটা একটা মারাত্মক ভুল ধারণা।
.

বই - আয়নাঘর
মূল - ড. ইয়াদ কুনাইবী
অনুবাদ - ইলমহাউস অনুবাদক টিম
সম্পাদনা - Asif Adnan
পৃষ্ঠা সংখ্যা - ২০০
নির্ধারিত মূল্য - ২০০ টাকা




ইসলামী রাষ্ট্রে আর কেউ একজন মুসলিমের চেয়ে বেশি মূল্যবান না। এমনকি যেসব মুসলিম খালিফাহরা যুলুম করতেন তারাও শত্রুর সামনে মুসলিমের রক্তের এই পবিত্রতা টিকিয়ে রাখতেন। আব্বাসী খালিফাহ আল-মু’তাসিম যালিম শাসক হিসেবে পরিচিত ছিল। কিন্তু একজন মুসলিম নারী যখন রোমানদের হাতে বন্দী হবার পর চিৎকার করে বললেন, ওয়া মু’হতাসিমা! হে মু’হতাসিম! তুমি কোথায়? তখন একজন মুসলিম নারীর জন্য তিনি এক সেনাবাহিনী পাঠিয়েছিলেন। 
.
যখন নাভার রাজ্যের খ্রিষ্টানরা আন্দালুসের তিন জন মুসলিম নারীকে বন্দী করেছিল তখন তাঁদের মুক্ত করার জন্য একটি বাহিনী পাঠিয়েছিলেন আল-হাজ্জ বিন মানসুর। তাই ইউরোপ তাঁকে সম্মান করত। ভয় পেত। তার মৃত্যুর পর তখন ইউরোপ উৎসব করেছিল। আজকের কোন শাসক মারা গেলে কাফিররা উৎসব করবে? বরং এসব শাসকদের কেউ যখন অসুস্থ হয় তখন পশ্চিমারা তার জন্য প্রাইভেট জেট পাঠিয়ে দেয়। তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয় ইউরোপের সেরা হাসপাতালে। যেন সুস্থ-সবল করে তাকে আবার মুসলিমদের খুন করতে আর আল্লাহ -এর দ্বীনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পাঠানো যায়। 
.
মুসলিমের রক্তের প্রকৃত মূল্য আমার মনে রাখতে হবে। এটা আমাদের সবার দায়িত্ব। আমাদের জানতে হবে শরীয়াহতে একজন মুসলিমের রক্ত কতটা মূল্যবান। আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ মুসলিমের সম্মান ও মর্যাদা সম্পর্কে কী বলেছেন, সেটা জানতে হবে, পরস্পরকে জানাতে হবে। সত্যিকারের ইসলামী রাষ্ট্রে প্রতিটি মুসলিমের জীবন, সম্পদ ও সম্মান সুরক্ষিত থাকে। যখন সে আক্রান্ত হয় তখন তার প্রতিরক্ষায় এগিয়ে আসে রাষ্ট্র। যখন কেউ তার অধিকার ছিনিয়ে নেয়, রাষ্ট্র তখন সেই হামলাকারীর কাছ থেকে তার অধিকার ফিরিয়ে আনে।
.
আমরা এই শরীয়াহ এবং এমন ইসলামী রাষ্ট্রের দিকেই আহ্বান করি।





সহীহ হাদিসে এসেছে, কারো অন্তরে অণু পরিমাণ বা সরিষাদানা পরিমাণে ঈমান থাকলে আল্লাহ তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে বের করে আনবেন।

এ হাদিসটি আসলে অন্তরের আমলের সাথে সম্পর্কিত। এখানে অন্তরের আমলের দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে। অন্তরের আমল কী?

অন্তরের আমল হলো আল্লাহর জন্য ভালোবাসা, আল্লাহর ওপর ভরসা করা, তাঁকে মহিমান্বিত করা, তাঁর প্রশংসা করা, তাঁকে ভয় করা, আল্লাহর রাহমাহ ও ক্ষমাশীলতার ব্যাপারে আশা রাখা।

অন্তরের আমলগুলোর বিভিন্ন পর্যায় বা লেভেল আছে। যেমন ধরুন, আল্লাহকে ভালোবাসা। এই ভালোবাসার কিন্তু অনেক পর্যায় হতে পারে। যেমন একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ের ভালোবাসা। একেবারে সর্বনিম্ন পরিমাণ। যার অন্তরে এটুকু আছে, সে আল্লাহকে ভালোবাসে, কিন্তু সেই ভালোবাসা বেশ দুর্বল। 

এই ভালোবাসা দুর্বল হলেও, এটা তাকে কুফর থেকে বাঁচিয়ে রাখে। এবং এ ভালোবাসার কারণে একসময় সে জান্নাতে যাবে। তবে এ ভালোবাসা তাঁকে গুনাহ বা আখিরাতের শাস্তি থেকে বাঁচাতে পারবে না। গুনাহ থেকে বাঁচতে হলে আবশ্যিক পরিমাণ ভালোবাসা লাগবে।
আবশ্যিক ভালোবাসা কী?

আল্লাহ সূরা তাওবাহয় বলেন,

قُلْ إِن كَانَ آبَاؤُكُمْ وَأَبْنَاؤُكُمْ وَإِخْوَانُكُمْ وَأَزْوَاجُكُمْ وَعَشِيرَتُكُمْ وَأَمْوَالٌ اقْتَرَفْتُمُوهَا وَتِجَارَةٌ تَخْشَوْنَ كَسَادَهَا وَمَسَاكِنُ تَرْضَوْنَهَا أَحَبَّ إِلَيْكُم مِّنَ اللَّـهِ وَرَسُولِهِ وَجِهَادٍ فِي سَبِيلِهِ فَتَرَبَّصُوا حَتَّىٰ يَأْتِيَ اللَّـهُ بِأَمْرِهِ ۗ وَاللَّـهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الْفَاسِقِينَ

‘বলো, (হে মুহাম্মদ),
‘যদি তোমাদের পিতারা, আর তোমাদের সন্তানেরা, আর তোমাদের ভাইয়েরা, আর তোমাদের স্ত্রীরা, আর তোমাদের গোষ্ঠীর লোকেরা আর ধন-সম্পদ, যা তোমরা অর্জন করেছ, আর ব্যবসা, তোমরা যার মন্দার ভয় করো, আর বাসস্থান, যা তোমরা ভালোবাসো (এসব) যদি তোমাদের কাছে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের পথে জিহাদ করার চেয়েও অধিক প্রিয় হয় তবে তোমরা অপেক্ষা করো আল্লাহ তাঁর নির্দেশ নিয়ে আসা পর্যন্ত। আর আল্লাহ ফাসিক সম্প্রদায়কে হিদায়াত দান করেন না।’ [তরজমা, সূরা তাওবাহ, ২৪]

অর্থাৎ আল্লাহ এখানে আমাদের জানিয়ে দিচ্ছেন, ফাসিক্ব হওয়া থেকে বাঁচতে হলে, গুনাহ ও শাস্তি থেকে বাঁচতে হলে আল্লাহর প্রতি এই পরিমাণ ভালোবাসা থাকতে হবে। আবশ্যিক ভালোবাসার পর্যায়ে পৌছাতে হলে এ আয়াতে আল্লাহ যে বিষয়গুলোর কথা উল্লেখ করেছেন সেগুলোর চেয়ে আল্লাহর আদেশ পালনকে বেশি ভালোবাসতে হবে।





সন্তানকে যদি ঈমান, আকিদাহ, আল্লাহর ভালোবাসা এবং তাক্বওয়ার শিক্ষা না দেন, তাহলে আপনার দেয়া নতুন পোশাক, হাতখরচের টাকা কিংবা রেখে যাওয়া সম্পদ ওদের কোনো কাজে লাগবে না। একদিন ঠিকই আল্লাহর সামনে ওরা আপনাকে দোষারোপ করবে। সন্তানের ভালো দিকগুলো খুঁজে বের করে চর্চার দ্বারা সেগুলোকে আরও গড়ে তোলা আপনার দায়িত্ব। তাদের স্বভাবের খারাপ দিকগুলো চিহ্নিত করে ধীরে ধীরে সেগুলো দূর করাও আপনার দায়িত্ব। আপনার সন্তানকে পবিত্র রাখার দায়িত্ব আপনারই।

হে অভিভাবকেরা শুনুন, ব্যস্ততার অজুহাত দেবেন না। এ অজুহাত আসলে নিজের সাথে প্রতারণা ছাড়া কিছুই না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম - এর সাহাবীগণ শুধু নিজ চাকরি, ব্যবসা কিংবা পরিবার নিয়ে চিন্তা করতেন না। তাঁদের চিন্তা করতে হতো পুরো পৃথিবী, পুরো মানবজাতির কাছে ইসলামের বার্তা পৌঁছে দেয়া নিয়ে। কিন্তু তাঁরা এটাকে কখনো অজুহাত হিসেবে দাঁড় করাননি। বিশ্বজয়ের অভিযান থেকে ফিরে তাঁরা সন্তানদের সময় দিতেন। তাদের শিক্ষা দিতেন তাওহিদ এবং আল ওয়ালা ওয়াল বারা-এর, কুরআন ও সুন্নাহর। দ্বীনি ইলম ও তাযকিয়্যাতুন নাফসের। দ্বীন ইসলামের বুঝ ও আদর্শের ওপর সন্তানদের গড়ে তুলতেন তাঁরা।

তাই অজুহাত দেবেন না। সন্তানদের চাহিদা মেটানোর জন্য আপনি রোজগারে ব্যস্ত, এ কথা বলবেন না। সন্তানদের প্রথম চাহিদা হলো আপনার সঙ্গ, আপনার কাছ থেকে দ্বীনের শিক্ষা পাওয়া। এটা আপনার ওপর ওদের অধিকার। ভালো খাওয়া-দাওয়া করে নাদুসনুদুস হওয়া শরীরের মধ্যে মুমূর্ষু ঈমান নিয়ে গড়ে ওঠা প্রজন্মের কোনো প্রয়োজন উম্মাহর নেই।
.



আজকের দেশি-বিদেশি জনপ্রিয় বক্তাদের মাঝে ইসলামের ব্যাপকতা খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। ইসলামের অবস্থান থেকে সৎ কাজের আদেশ আর মন্দ কাজে বাধা দেয়ার শিক্ষা সাধারণ মুসলিমদের সামনে তুলে ধরা হয় কালেভদ্রে। বলা হয় না ঘৃণ্য জাতীয়তাবাদের সাথে ইসলামী ভ্রাতৃত্ববোধের সাংঘর্ষিকতার কথা। আল ওয়ালা ওয়াল বারা-র কথা। স্পষ্ট করা হয় না গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, লিবারেলিযমসহ নানান তন্ত্রমন্ত্রের সাথে তাওহিদের চিরন্তন লড়াইয়ের বাস্তবতা। ইসলামের সামাজিক ভূমিকা, আর শাসনব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা তো অনেকটাই ট্যাবু। গুরুত্ব পায় না সভ্যতার সংঘাতও। স্পষ্ট বক্তব্য পাওয়া যায় না ইসলামের বিরুদ্ধে চলা যুদ্ধের ব্যাপারে। খুব একটা মনোযোগ পায় না সারা বিশ্বজুড়ে নির্যাতিত মুসলিমদের কথা, আর দিন দিন লম্বা হতে আক্রান্ত মুসলিম ভূখণ্ডের তালিকা। উচ্যবাচ্য হয় না ইসলামের বিভিন্ন দিককে ‘সন্ত্রাস’ আর ‘উগ্রবাদ’ নাম দিয়ে বেআইনি সাব্যস্ত করা নিয়েও। কথা হয় না আল্লাহর পৃথিবীতে আল্লাহ -এর আইন বাস্তবায়ন নিয়ে।

আমাদের সামনে তুলে ধরা হয় কাটছাঁট করা এক ইসলামকে। অনেকে তো সরাসরি বলেই বসেন—‘উম্মাহর কী অবস্থা তা নিয়ে ভাবার দরকার নেই, নিজেকে নিয়ে ভাবুন।’ ‘শরীয়াহ প্রতিষ্ঠা হয়েছে কি না সেটা নিয়ে আপনাকে প্রশ্ন করা হবে না, নিজের আমল নিয়ে চিন্তা করুন।’ ‘আমি ও আমরা’, ‘এখানে ও এখন’ নিয়ে ব্যস্ত থাকার শিক্ষা দেয়া হয় ইসলামের মোড়কে। চ্যালেঞ্জ করা হয় না বিদ্যমানতাকে। যা চলছে, যেভাবে চলছে এর মধ্যে থেকে শান্তি আর স্বস্তিতে, হাসিখুশি কতটুকু ‘ইসলাম’ পালন করা যায়, তা নিয়েই সব আলোচনা। সব আয়োজন। যেন নিরন্তর ‘ভালোলাগার’ কিংবা ‘ভুলে থাকার’ এক কল্পজগতে আমরা ঘুরে বেড়াচ্ছি। সারাক্ষণ যেখানে কুসুম কুসুম রোদ। রোদের আলস্য গায়ে মেখে সেখানে আমরা আত্মকেন্দ্রিকতার প্রাসাদ বানাই। ইটের পর ইট বসাই। আনন্দের অবসাদে ভুলে থাকি পতনের শব্দ আর ঝড়ের তাণ্ডব।




তারুণ্য হলো তীব্র উৎসাহ, প্রাণশক্তি, শারীরিক সক্ষমতা আর পরিষ্কার চিন্তার সময়। কিন্তু আমরা আমাদের তারুণ্যটা কীভাবে কাটাই?
.

এই অমূল্য সময়টা আমরা কাটিয়ে দিই তুচ্ছ বিষয় নিয়ে তর্ক করে। আড্ডা দিয়ে। অর্থহীন বিষয়ের পেছনে ছুটে। একবার গুরুত্বহীন বিষয়ের খাদে পড়ে, তারপর আবার সেখান থেকে বের হবার পেছনে।
এ সময়টাতে আমরা যদি দৃষ্টি অবনত করা আর নজরের হেফাযতের ব্যাপারে গড়িমসি করি, পরিপূর্ণভাবে পর্দা করা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগি, ফাজরের সালাতে উঠতে হিমশিম খাই, নারীপুরুষের অবাধ মেলামেশা এড়িয়ে যাওয়ার ব্যাপারে অবহেলা করি, তাহলে কীভাবে হবে? আমরা যদি সব সময় নষ্ট করি টিভি, গান, সিরিয়াল, সিনেমার পেছনে—তাহলে কীভাবে হবে?
.

আমাদের তারুণ্য যদি এভাবেই কেটে যায়, তাহলে উম্মাহকে নিয়ে কখন আমরা চিন্তা করব? কখন উম্মাহর দেহে জমা অপমানের ধুলো ঝেড়ে ফেলব? ডুবন্ত এ উম্মাহকে কে বাঁচাবে? যদি আমরা নিজেরাই ডুবন্ত হই?



অর্ডার করার জন্য যোগাযোগ করুন এই পেইজে -
নিদা পয়েন্ট - https://www.facebook.com/nidapointbd/

অথবা নিচের নাম্বারে - +880 1716-122518
Next Post Previous Post