সাইমুম সিরিজ ৬১ - Saimum Series-সাইমুম সিরিজ ২০২৪ Books Review And PDF Download
থ্রিলার সিরিজ সাইমুম নিয়ে সাইমুম এর ভক্তদের লেখা সমুহ - Saimum Series-সাইমুম সিরিজ Books Review And PDF Download 2024
বাংলাদেশের অন্যতম থ্রিলার সিরিজ সাইমুম অনলাইনে পড়তে কিংবা প্রায় ৫০ টার মত দেখতে পারেন এই পোস্ট।
সাইমুম সিরিজ অনলাইনে পড়ুন:
Saimum Series-সাইমুম সিরিজ - "রক্তাক্ত পামির"। Bangla Book Saimum Series Story By তরিকুল ইসলাম তুহিন
২০০৫ সাল। আমার বইপ্রীতি তখন চরমে। ক্লাসের ফাঁকে বসে বসে হুমায়ুন আহমেদ পড়ছিলাম।
এক সহপাঠী বন্ধু একটি বই এনে হাতে দিল। বইটি আকারে ছোট। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি একটি সিরিজ বই। নাম "রক্তাক্ত পামির"। উপরে ছোট্ট করে লেখা "সাইমুম-০৫"।
এক সহপাঠী বন্ধু একটি বই এনে হাতে দিল। বইটি আকারে ছোট। দেখেই বোঝা যাচ্ছে এটি একটি সিরিজ বই। নাম "রক্তাক্ত পামির"। উপরে ছোট্ট করে লেখা "সাইমুম-০৫"।
পৃষ্ঠা উল্টাতেই চোখে পড়লো-
"পামির সড়ক ধরে হিসার দূর্গের দিকে তীর বেগে ছুটে আসছিল 'ফ্র' এর একটি জীপ।
"পামির সড়ক ধরে হিসার দূর্গের দিকে তীর বেগে ছুটে আসছিল 'ফ্র' এর একটি জীপ।
সাইমুম সিরিজ ৬১
- সাইমুম সিরিজ 61 pdf
- সাইমুম সিরিজ pdf
- সাইমুম সিরিজ ৬১ pdf download
- সাইমুম সিরিজ ৬০ pdf download
- saimum series 61
ইয়াকুবের কাছ থেকে ওয়্যারলেসে খবর পেয়ে 'ফ্র' আহমদ মুসাকে ধরার জন্য আরেকজন কর্ণেলের নেতৃত্বে একটি টীম পাঠিয়েছিল হিসার দূর্গে। 'ফ্র' জানত, হিসার দূর্গ থেকে প্রকাশ্য প্রতিরোধের কোন সম্ভাবনা নেই এবং ও টিমটাই যথেষ্ট। তবু 'ফ্র' কর্মকর্তারা আশ্বস্ত হতে পারেনি, তাই বাড়তি ব্যবস্থা হিসাবে আরেকজন কর্ণেলের নেতৃত্বে তারা এই টিমটি পাঠিয়েছে। এ টিমেও আগের মতই একজন কর্ণেল, একজন ক্যাপ্টেন এবং চারজন লেফটেন্যান্ট।
ফাঁকা পামির সড়কে জীপটি তীর বেগে এগুচ্ছে। রীতিমত কমব্যাট ধরনের জীপ। ড্রাইভ করছিল ক্যাপ্টেন। পাশে বসা কর্ণেল, তার হাতে খোলা ওয়্যারলেস। কর্ণেলের মুখ প্রসন্ন, স্বস্তির একটা তৃপ্তি চোখে-মুখে। ওরা আহমদ মুসা ও আমির সুলাইমানকে বন্দী করে ফিরে আসছে। একশ কিলোমিটার বেগে ওরা আসছে। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওরা হিসার রোড ছাড়িয়ে পামির রোডে এসে পড়বে.........।"
পড়তে পড়তে গা'টা শিরশির করে উঠলো। যতোই পড়ছি ততোই শিহরিত হচ্ছি। পাশে রাখা হুমায়ুন আহমেদের কথা ভুলে গেলাম। বন্ধুর দিকে তাকিয়ে হেসে বললাম- ধন্যবাদ।
এভাবেই সাইমুমের সাথে আমার পরিচয়।
রক্তাক্ত পামির শেষ হলো। পাগল হয়ে গেলাম সিরিজের শুরু থেকে নিয়ে প্রতিটি খণ্ড হাতে পাওয়ার জন্য। বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করলাম। তার কাছেও তখন আর কোনো খণ্ড নেই। অনেক চেষ্টা করেও তখনকার মতো সাইমুমের আর কোনো বই-ই পেলাম না।
রক্তাক্ত পামির শেষ হলো। পাগল হয়ে গেলাম সিরিজের শুরু থেকে নিয়ে প্রতিটি খণ্ড হাতে পাওয়ার জন্য। বন্ধুর সাথে যোগাযোগ করলাম। তার কাছেও তখন আর কোনো খণ্ড নেই। অনেক চেষ্টা করেও তখনকার মতো সাইমুমের আর কোনো বই-ই পেলাম না।
২০০৭ সাল। লেখাপড়া করি মহাখালীতে। কয়েকজন সহপাঠী মিলে টাকা তুলে প্রতি সপ্তাহে পাশের লাইব্রেরী থেকে তিন গোয়েন্দা সিরিজ নিয়ে আসি। এভাবে কম টাকায় বেশি বই পড়া যায়।
একদিন তিন গোয়েন্দা সিরিজ আনতে গিয়েই হঠাৎ চোখে পড়লো "এক নিউ ওয়ার্ল্ড"। উপরে লেখা "সাইমুম-৩০"।
একদিন তিন গোয়েন্দা সিরিজ আনতে গিয়েই হঠাৎ চোখে পড়লো "এক নিউ ওয়ার্ল্ড"। উপরে লেখা "সাইমুম-৩০"।
কিসের আর তিন গোয়েন্দা!
সাইমুম হাতে পেয়ে চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো অবস্থা হলো আমার। সহপাঠীদের ডেকে বললাম, তিন গোয়েন্দা সিরিজ বাদ দিয়ে সাইমুম সিরিজ নিই। তারা প্রথমে ইতস্তত করলেও আমার মুখে সাইমুমের প্রশংসা শুনে আর না করে নি।
সাইমুম হাতে পেয়ে চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো অবস্থা হলো আমার। সহপাঠীদের ডেকে বললাম, তিন গোয়েন্দা সিরিজ বাদ দিয়ে সাইমুম সিরিজ নিই। তারা প্রথমে ইতস্তত করলেও আমার মুখে সাইমুমের প্রশংসা শুনে আর না করে নি।
২০০৯ সাল। তখন আমি ঢাকা মালিবাগের ছাত্র। সেখান থেকে মগবাজার ওয়্যারলেস গেট মাত্র দশ মিনিটের রাস্তা, যেখানে সাইমুমের গোডাউন।
ছাত্র অবস্থায় হাতে টাকা বেশি থাকে না। ইচ্ছে থাকলেও বেশি বই একসাথে কিনা সম্ভব হতো না।
প্রথম সাময়িক পরীক্ষা সামনে এলো। মাদ্রাসার নিয়ম অনুযায়ী প্রতি সাবজেক্টে গড়ে ৯০ এর উপরে নাম্বার পেলে খাবার ফ্রি।
প্রথম সাময়িক পরীক্ষা সামনে এলো। মাদ্রাসার নিয়ম অনুযায়ী প্রতি সাবজেক্টে গড়ে ৯০ এর উপরে নাম্বার পেলে খাবার ফ্রি।
লেখাপড়ায় আমি সবসময়ই প্রথম ছিলাম। সুযোগটা কাজে লাগালাম।
খাবার ফ্রি করা হলো। আর প্রতি মাসের খাবারের টাকা নিয়ে চলে যেতাম বড় মগবাজার ওয়্যারলেস গেট। রফরফ বুক হাউস থেকে নিয়ে আসতাম পছন্দের সিরিজ।
সাইমুম-১ থেকে নিয়ে "রোমেলী দুর্গে" অর্থাৎ "সাইমুম-৪৬" পর্যন্ত সবগুলো বই তখন আমার সংগ্রহে।
খাবার ফ্রি করা হলো। আর প্রতি মাসের খাবারের টাকা নিয়ে চলে যেতাম বড় মগবাজার ওয়্যারলেস গেট। রফরফ বুক হাউস থেকে নিয়ে আসতাম পছন্দের সিরিজ।
সাইমুম-১ থেকে নিয়ে "রোমেলী দুর্গে" অর্থাৎ "সাইমুম-৪৬" পর্যন্ত সবগুলো বই তখন আমার সংগ্রহে।
হঠাৎ নির্বাচনের আগে একদিন মাদ্রাসায় তল্লাশি চালানো হলো। ভয়ে সেদিন সবগুলো বই জানালার ফাঁক দিয়ে নিচে ফেলে দিয়েছিলাম। কতোটা কেঁদেছিলাম সেদিন, সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।
যাহোক, তখনো "সাইমুম-৪৬" পর্যন্তই আমার পড়া। শুনেছিলাম স্যার আবুল আসাদকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ভেবেছিলাম সাইমুমের আর কোনো সিরিজ হয়তো পড়া হবে না।
কিন্তু ভাগ্য সহায় হলো। স্মার্ট ফোন হাতে আসার পর সর্বশেষ ৬১তম খণ্ড পর্যন্ত সাইমুম পড়ার সৌভাগ্য হলো। আর এই ৬১খণ্ড আমি আজকে পর্যন্ত ৬বার পড়ে শেষ করলাম।
★ ★ ★
★ ★ ★
শুধু বিনোদন বা সাধারণ জ্ঞান অর্জনের জন্য হয়তো ভালো লেখকদের মধ্যে যেকারো বই পড়া যায়। সাহিত্যের খোরাকও হয়তো অনেক বইয়ে আরো ভালো পাওয়া যাবে। কিন্তু সাইমুমের মধ্যে যেটা পাওয়া যাবে, সেটা অন্য হাজারটা বইয়েও পাওয়া যাবে না।
আরো ৭-৮ বছর আগে "রাহবার সিরিজ" নামের একটা বই আমার হাতে এসেছিল। প্রথম পৃষ্ঠা উল্টাতেই চোখে পড়লো সেখানে লেখা-
" কেন আপনি রাহবার সিরিজ পড়বেন?" কারণ, রাহবার সিরিজ এমন একটি রহস্য সিরিজ, যেটা শুরু করার পর শেষ না করে উপায় নেই। রাহবার সিরিজে আছে, মাসুদ রানার মতো এ্যাকশন এবং ক্ষিপ্রতা, আহমদ মুসার মতো খোদাভীতি....!"
প্রচণ্ড এক হোচট খেলাম এতটুকু পড়ে। ভাল করে দেখলাম লেখকের নাম "নাজমুস সায়াদাত"। অর্থাৎ তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যে, আহমদ মুসার চেয়ে মাসুদ রানা আরো ক্ষিপ্র এবং এ্যাকশন বেশি!
মনটা খারাপ হয়ে গেল আমার। ভাবলাম, আমিও তো মাসুদ রানা পড়েছি। কিন্তু মাসুদ রানাকে কোনো দিক দিয়েই আহমদ মুসার চেয়ে বেশি কিছু মনে হয়নি বরং অনেক কম মনে হয়েছে।
মনটা খারাপ হয়ে গেল আমার। ভাবলাম, আমিও তো মাসুদ রানা পড়েছি। কিন্তু মাসুদ রানাকে কোনো দিক দিয়েই আহমদ মুসার চেয়ে বেশি কিছু মনে হয়নি বরং অনেক কম মনে হয়েছে।
যাহোক, ভাবলাম রাহবার সিরিজে যেহেতু আহমদ মুসা এবং মাসুদ রানা উভয়কেই পাওয়া যাবে, তাহলে তো এটা পড়াই ভাল। একের ভিতর তিন!
কিন্তু কয়েক পৃষ্ঠা পড়েই মেজাজ বিগড়ে গেল। গা জ্বলছিল রাগে। এ নাকি আহমদ মুসা এবং মাসুদ রানা!!!
তারপরও কোনোরকম শেষ করলাম বইটা।
তবে লেখকের একটা জিনিস আমার কাছে ভাল লেগেছে। সেটা হলো, আমি যেটা পড়ছি সেটা হলো "রাহবার-২"। আর "রাহবার-১" পড়ে পাঠকদের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, লেখকের কাছে পাঠানো পাঠকদের সেই মন্তব্যগুলোতে প্রায় সবাই লেখককে ধুয়ে দিলেও লেখক সেগুলো নির্দ্বিধায় বইয়ের শেষদিকে ছেপে দিয়েছেন। যেটা লেখকের স্বচ্ছ মনমানুসিকতার প্রমাণ দেয়।
তবে লেখকের একটা জিনিস আমার কাছে ভাল লেগেছে। সেটা হলো, আমি যেটা পড়ছি সেটা হলো "রাহবার-২"। আর "রাহবার-১" পড়ে পাঠকদের কী প্রতিক্রিয়া হয়েছিল, লেখকের কাছে পাঠানো পাঠকদের সেই মন্তব্যগুলোতে প্রায় সবাই লেখককে ধুয়ে দিলেও লেখক সেগুলো নির্দ্বিধায় বইয়ের শেষদিকে ছেপে দিয়েছেন। যেটা লেখকের স্বচ্ছ মনমানুসিকতার প্রমাণ দেয়।
সেখানে লেখকের প্রতি সবার প্রায় একটাই অভিযোগ। আর তা হলো- "আপনি নিজে যেমন পারেন তেমন লিখবেন তা নিয়ে আমাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। কিন্তু আপনি সাইমুমের সাথে মাসুদ রানার তুলনা করেন কিভাবে!? এমন হাজারটা মাসুদ রানা মিলেও একটি সাইমুমের সমতুল্য হবে না। আর আপনি সেই সাইমুম থেকে মাত্র আহমদ মুসার খোদাভীতি নিলেন!? আর এ্যাকশন নিলেন মাসুদ রানার...!?? ছিঃ...... ইত্যাদি।"
এ-ই ছিল সাইমুমের প্রতি পাঠকদের ভালোবাসা।
আহমদ মুসাকে আমরা সবাই চিনি। তাঁর চরিত্র সম্পর্কে জানি। কিন্তু আসলে কে এই আহমদ মুসা? ওটা তো একটা চরিত্র মাত্র। আহমদ মুসা যা বলেন, যা করেন, যা দেখেন, আসলে সেগুলো কে বলেন? কে করেন? কে দেখেন? আহমদ মুসা নাকি আবুল আসাদ?
আহমদ মুসার কথা শুনলে কখনো তাঁকে মনে হয় শিক্ষক। কখনো মনে হয় ধর্মগুরু, কখনোবা যোদ্ধা। কখনোবা আরো কতকিছু মনে হয়।
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আহমদ মুসার মতো করে কে ভাবেন? আহমদ মুসা তো একটা কল্পনা মাত্র! তাঁর মূলে কে?
কিন্তু প্রকৃতপক্ষে আহমদ মুসার মতো করে কে ভাবেন? আহমদ মুসা তো একটা কল্পনা মাত্র! তাঁর মূলে কে?
আমি যদি বলি বাস্তবের আহমদ মুসা হলেন স্যার আবুল আসাদ। তাহলে কি আমার ভুল হবে?
আহমদ মুসার সকল কাজ, সকল কথা, সকল ভাবনা তো আবুল আসাদ স্যারের। মূল নায়ক তো তিনি।
আহমদ মুসার সকল কাজ, সকল কথা, সকল ভাবনা তো আবুল আসাদ স্যারের। মূল নায়ক তো তিনি।
হ্যাঁ, কাল্পনিক আহমদ মুসাকে আমি যতোটা ভালোবাসি, ঠিক ততোটাই ভালোবাসি স্যার আবুল আসাদেকে। আমার কাছে তিনিই আহমদ মুসা, তিনিই হাসান তারিক, তিনিই কর্ণেল মাহমুদ, তিনিই যোবায়েরভ, তিনিই কর্নেল কুতায়বা, তিনিই জর্জ আব্রাহাম জনসন প্রমুখ।
শুনেছি স্যার খুব অসুস্থ। দোয়া করি এবং দোয়া চাই তাঁর সুস্থতার জন্য।
স্যারের সাথে দেখা করার খুব শখ। জানি না কখনো মনের এই ইচ্ছেটা পূর্ণ হবে কি না.......
স্যারের সাথে দেখা করার খুব শখ। জানি না কখনো মনের এই ইচ্ছেটা পূর্ণ হবে কি না.......
-তরিকুল ইসলাম তুহিন
নারায়ণগঞ্জ।
২.
তখন ক্লাস থ্রিতে পড়ি। প্রয়াত নানু ভাইয়ের টেবিলে দেখলাম কি জানি একখানা বই। বইটা নিয়ে পড়তে শুরু করে দিয়েছিলাম। অবিশ্বাস্য মনে হতে পারে, তবে হ্যাঁ ক্লাস থ্রি ঠিকই বলছি। বইটা পড়ে শেষ করে ফেলেছিলাম। এরপর ফাইনাল পরীক্ষা চলে আসার কারণে মা আমাকে আর নন-একাডেমিক বই পড়তে দেইনি।
ফাইনাল পরীক্ষা শেষের পর আমি সেই বইয়ের সন্ধান করেছি তবে খোজ পাইনি কিছুতেই, হারিয়ে গেছে। মা জননীও আমাকে আর বইটির নাম বলতে পারে না। ক্লাস থ্রির একটা ছেলে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করেও নাম বের করতে পারলাম না। শুধু ঘটনা মাথায় ছিলো আহমদ মুসা নামের একজন ছিল। সুরিনামে যাবার পথে পাহাড়ি রাস্তায় ওমরবঙ্গো নামের একটা মানুষের সাথে গাছে পেতে রাখা ফাঁদে আটকা পড়ে। ব্যস এতটুকুই।
ফাইনাল পরীক্ষা শেষের পর আমি সেই বইয়ের সন্ধান করেছি তবে খোজ পাইনি কিছুতেই, হারিয়ে গেছে। মা জননীও আমাকে আর বইটির নাম বলতে পারে না। ক্লাস থ্রির একটা ছেলে বন্ধুদের সাথে আলোচনা করেও নাম বের করতে পারলাম না। শুধু ঘটনা মাথায় ছিলো আহমদ মুসা নামের একজন ছিল। সুরিনামে যাবার পথে পাহাড়ি রাস্তায় ওমরবঙ্গো নামের একটা মানুষের সাথে গাছে পেতে রাখা ফাঁদে আটকা পড়ে। ব্যস এতটুকুই।
এই স্মৃতিটুকু মাথায় রেখেই পার করেছিলাম ৩টি বছর। উক্ত ঘটনাটুকুই মাথার মধ্যে গেঁথে ছিলো। ক্লাস সেভেনে বাসার পাশের সহপাঠী দরিদ্র সালাম ভাই আবার ইদ, পুজো পহেলা বৈশাখে বাদাম,ছোলা পিয়াজির দোকান দিতো। সেদিনও যেনো কোথায় মাথায় করে বাদাম নিয়ে যাচ্ছিলো।
বাদাম কিনলে আবার বই ছিড়ে সেটাতে করে দিচ্ছিল। ছোট একটা পুরনো বই দেখে পছন্দ হলো। সালাম ভাইকে বলেছিলাম একটু দাঁড়াও আমি তোমাকে অন্য একটা বই দিচ্ছি তুমি আমাকে এই বইটা দাও। দৌড়ে বাসায় যেয়ে মাকে বলেছিলাম মা ও মা একখানা পুরাতন বই দাও৷ মোটা একখানা গ্রামার বইয়ের পরিবর্তে ছোট সেই বইটি নিয়েছিলাম।
বাদাম কিনলে আবার বই ছিড়ে সেটাতে করে দিচ্ছিল। ছোট একটা পুরনো বই দেখে পছন্দ হলো। সালাম ভাইকে বলেছিলাম একটু দাঁড়াও আমি তোমাকে অন্য একটা বই দিচ্ছি তুমি আমাকে এই বইটা দাও। দৌড়ে বাসায় যেয়ে মাকে বলেছিলাম মা ও মা একখানা পুরাতন বই দাও৷ মোটা একখানা গ্রামার বইয়ের পরিবর্তে ছোট সেই বইটি নিয়েছিলাম।
রাতে পড়তে বসে দেখি শুরুতেই নাম (আহমদ মুসা)। ইয়া আল্লাহ বলে চিল্লানি দিয়ে উঠে মা জননীকে ডেকে বললাম মা পেয়ে গেছি। সেই ক্লাস থ্রি ধরে যার নাম মাথার মধ্যে পুষে রেখেছিলাম।
সাইমুম ৩২ : অক্টোপাসের বিদায় লেখক আবুল আসাদ
প্রয়াত নানার টেবিল থেকে নিয়ে ওই বইটাই পড়েছিলাম। ৪ বছর পর আবার ঠিক সেই বইটা কাকতালীয় হাতে এসে পৌছালো। এই এখনও প্রায় বড়বোন, মা গল্পটা করে। বইটা পাবার পরে সেদিন রাতে কী আমি ঘুমিয়েছিলাম কিনা জানি না! সাইমুম ছিল আবার ভালবাসা। কত আবেগ নিয়ে পাঁচ ছয় মাস পর পর একটা একটা নতুন বই হাতে পেতাম। কালীগঞ্জ ইসলামিয়া লাইব্রেরি ছাড়া বইটা পেতামও না।
কিশোর বয়সে কতবার ভেবেছি ঢাকায় যাব আবুল আসাদ স্যারের সাথে দেখা করব। হাইস্কুল শেষ করেছি ৬ বছর আগেই। এখন আমি ঢাকায় থাকি। আবুল আসাদ স্যারের সংগ্রাম পত্রিকা আর আমার দূরত্ব মাত্র কয় এক মিনিটের পথ। তবে দেখা করা হয়ে উঠেনি, উঠে না। কিশোর বয়সের সেই আবেগটা এখন আর প্রকাশ করতে পারব না। স্যারও বুঝবে না। পরিনত এই বয়সে এসে হাজার, লক্ষ ঘটনার ভিড়ে বারবার মনে পড়ে জীবনের সেরা ওই ঘটনাটি।
- Tushar Khan
৩.
সাইমুম পড়া শুরু ২০০৫ এ।
ছোট থেকেই গল্পের বই পড়ি। যোগাযোগ, উঠাবসা ছিল বই পড়ুয়াদের সাথেই।
ছোট থেকেই গল্পের বই পড়ি। যোগাযোগ, উঠাবসা ছিল বই পড়ুয়াদের সাথেই।
তখন আমি তিন গোয়েন্দার পাগলা ফ্যান। কিশোর -মুসা-রবিনের সাথে জলদস্যুর মোহর খুজছি, ফগর্যাম্পারকট কে তুর্কি নাচ নাচাচ্ছি, ওমর শরীফের সাথে দুর্গম এলাকায় উড়ে যাচ্ছি, নয়ত জন্তু-জানোয়ার ধরে বেড়াচ্ছি আমাজনে, আফ্রিকায়।
এর সাথে ছিলো ক্রিস্টি দাদীর তুলকালাম মার্কা ক্রাইম মিস্ট্রি, কখনও বা ড্যান ব্রাউনের পাগল করা সিম্বলিজম। জুলভা্নের সাইফাই।
এর মধ্যে এক বড় ভাই ধরিয়ে দিলেন "অপারেশন তেলআবিব"। ফ্ল্যাপের পিছনে কাহিনী সংক্ষেপ সাদামাটা। তার উপর এক বইএর সাথে আরেক বই এর কাহিনী রিলেটেড। আমার আবার স্ট্যান্ড এলোন প্লট ভাল্লাগে। বই নিয়ে এসে বাসায় ফালায় রাখলাম।
একদিন এমনিই পড়া শুরু করলাম। শুরুতেই মর্মস্পর্শী আহমদ মুসার জীবনী। আহা, কি কষ্ট, কি কষ্ট। ফারজানার মৃত্যু অন্তরাত্মা কাপিয়ে দিয়েছিল। এর পর দোর্দন্ড প্রতাপশালী মোসাদ, সিনবেথ, আমানের সাথে সাইমুমের লুকোচুরি, হিট এন্ড রান। ফট করে দেখি বই শেষ। মাথা খারাপের যোগাড়। এমিলিয়া আটক দুর্দান্ত মোসাদের কাছে। আমান, সিনবেথ, মোসাদের জালছিড়ে মাহমুদ কিভাবে তাকে উদ্ধার করবে। বিপ্লব কি সফল হবে?
একে একে আহমদ মুসার হাত ধরে গেলাম মিন্দানাও। সেখান থেকে মধ্য এশিয়া। আহ, কি সব অপূর্ব দিনছিলো তখন। সোভিয়েত রাশিয়ার দমন নির্যাতনের মুখে কুতাইবার তুলোর উপর সিজদাহ, হাসান তারিকের দৃঢ় ইমান, জামিলভের রূপান্তর, আয়িশা আলিয়েভার সত্য গ্রহণ করে নির্মম শাস্তির সম্মুখীন হওয়া৷
দাদী-রোকাইয়েভার হঠাৎ বিলাশি আয়েশি জীবন থেকে সীমাহিন দারিদ্রতা, ফাতিমা ফারহানাদের রুশ রক্তচক্ষু লুকিয়ে দাওয়াতি কাজ ------ কি দুর্দান্ত প্লট, কি অসমান্য কাহিনী। মুমিনের জীবন, সোভিয়েত মুসলিমদের ভয়াবহ কষ্টের, যন্ত্রনার মুখে ইমান টিকিয়ে রাখা প্রচেষ্টা সাইমুম চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল। সাইমুম আমাকে শেখালো মেয়েদের সাথে অবাধ মেলামেশা না করা, দৃষ্টি অবনত রাখা। সাইমুম আমাদের জানালো মুসলমানরা কি দুর্দান্ত এক জাতি ছিল, বর্তমান সভ্যতা কতটা ঋণী মুসলিমদের কাছে।
দাদী-রোকাইয়েভার
একে একে আহমদ মুসার হাত ধরে ঘুরে বেড়িয়েছি মধ্য এশিয়া, বেলগ্রেড, প্যারিসের রাজপথ, আমেরিকার অলিগলি......। গোয়াদেল কুইভারের সেই বৃদ্ধের সাথে আমিও কেদেছি মরিস্কোদের করুন কাহিনী পড়ে। ফাতিমা ফারহানা, মেইলিগুলির সীমাহিন দৃঢ়তা দেখে আশান্বিত হয়েছি।
জীবনের শহরে রোদ উঠেগেছে। মুসলিম উম্মাহর করুন দশা। কাশ্মীর, ফিলিস্তিন, আফগান, ভারত, মধ্যপ্রাচ্য.... ....
মুসলিমদের অবস্থা সাইমুমের সাধারন মুসলিমদের মতই করুন। কিন্তু আমাদের মাঝে আহমদ মুসা নেই, হাসান তারিক, কুতাইবা, সালমান শামিল, সান ওয়াকাররা নেই। মাজহাব-মানহাজ এর ভেদাভেদ ভুলে এক হওয়ার কোন অদম্য আগ্রহ নেই।
মুসলিমদের অবস্থা সাইমুমের সাধারন মুসলিমদের মতই করুন। কিন্তু আমাদের মাঝে আহমদ মুসা নেই, হাসান তারিক, কুতাইবা, সালমান শামিল, সান ওয়াকাররা নেই। মাজহাব-মানহাজ এর ভেদাভেদ ভুলে এক হওয়ার কোন অদম্য আগ্রহ নেই।
সিরিয়ার বাচ্চাদের কান্না আর গাছের পাতা খাওয়ার দৃশ্য দেখতে দেখতে দুচোখ ভিজে উঠে। আল্লাহ উম্মাহর মাঝে একজন আহমদ মুসা দিন৷ আমাদের হাসান তারিক, মাহমুদ, যুবায়েরভ এর মত ত্যাগী, সাহসী, ইমানদার বানিয়ে দিন।
আল্লাহ আবুল আসাদ স্যারের হায়াত বাড়িয়ে দিন।
সাইমুম এর সিনোনিম
সাইমুম এর সিনোনিম
৪.
সাইমুম.
আমি তখন ক্লাস ৫ এ পড়ি আমরা ৪ ভাইবোন। আমার বড় ৩ বোন আর আমি সবার ছোট। আমার ছোট বোন ইতি ইসলামিক কাহিনী টাইপের বই পড়তে খুব ভালোবাসে। আমার চাচাতো ভাই মেহেদী আপুকে অনেক বই এনে দিতো আর আপু সেগুলা পড়তো। এভাবে একদিন মেহেদী ভাইয়া আপুকে সাইমুম এর কাহিনি বলে তখন মেইবি ৩১ পর্ব পর্যন্ত বের হয়েছিল। বাট মেহেদি ভাই গ্রামে সংগে করে মাত্র দুই তিনটে এনেছিল তাও মাঝের দিক দিয়ে আপু। সেগুলা পড়েই বাকি গুলা পড়ার জন্য মেহেদি ভাই কে বলে ভাইয়া আপুকে বাকি গুলা এনে দেয় এরপর আমার আরেক খালাতো বোন তমা তাকে পড়তে বললে সেও পড়ে। তারা দিনরাত শুধু এই সাইমুম পড়তো। এভাবে আমি খেয়াল করি ওরা দিন রাত শুধু আহমেদ মুসা, আহমেদ মুসা নিয়ে গল্প করে। তার নাকি অনেক বুদ্ধি, যেখানেই যায় সবাই তার জন্য পাগল হইয়া যায় আরো এনতেন। আমি তখন ছোট। আর আমি প্রচন্ড গেম পাগল সেইজন্য বই দেখলেই রাগ উঠে। কারন নিজের বই ই ঠিক মত পড়ি না আর তো গল্পের বই। তবুও ওদের গল্প শুনে পড়ার কথা একবার ভাবলাম। পড়ে দেখি পৃষ্ঠা ২০০+🙄 ও আল্লাহ এত পড়বো কেমনে? এরপর আপুকে বললাম তোরা দিনভর খালি এই বই নিয়ে এত গল্প করিস কেন? ও বলে এইটা একটা সিরিজ এর অনেক গুলা পার্ট আছে আর আরো হচ্ছে তাই বলে আরো সাইমুমের এর বই দেখালো। আমার দেইখা হইয়া গেছে🙂 ২০০ পৃষ্ঠার ৩০,৩৫ টা বই পড়া কেমনে possible?? পড়ে আশা ছাইড়া দিলাম। যাইহোক আমার এক ফ্রেন্ড এর নাম ছিল সাইমন। একদিন কৌশিকের সাথে ওর প্রচুর মারামারি হয়। সে বাইরে বালি মাখামাখি কইরা পুরা অস্থির। পড়ে ক্লাসে ফরিদ স্যার আসলে ওদের খুব বকা দেন আর ওদের বালি মাখা শরীর দেইখা বলেন সাইমন তোমার সাথে একটা মিল পাইছি আমি সাইমন আর সাইমুম আর সাইমুম মানে হচ্ছে মরুভূমির ঝড়। যেটা নিয়ে খুব সুন্দর একটা সিরিজও আছে যেটা তোমাদের সবার পড়া উচিত বড় হয়ে। তখন আমার মনে পড়ে আপুর কথা। এরপর আমি আপুর সিরিজ থেকে একটা বই টান দেই তার নাম হলো তিয়েনশানেরওপারে ১০,১৫ পেজ পড়ে দেখি আহমেদ মুসাকে জেনারেল বরিস নামে একজন বন্ধি করে নিয়ে যাচ্ছে🙄। পড়ে ওটা রেখে দেই৷ এবার প্রথম থেকে অপারেশন তেল আবিব-১ শুরু করি। এটা শেষ করতে আমার টাইম লেগেছিল ৫ দিন। এরপর থেকে আমি সাইমুমের ভক্ত হয়ে পড়ি। এমনও দিন গেছে একদিনে দুই,তিনটেও পড়ে শেষ করছি। এভাবে ক্লোন ষড়যন্ত্র পর্যন্ত আমি বইগুলা আমি ৭,৮ বার করে শেষ করি৷ ইভেন আম্মু পড়ার বই পড়তে বললে তার মধ্যে ওটা রেখে লুকিয়ে সাইমুম পড়তাম। আর ফ্রেন্ড দের পড়তে বলতাম আমার অনেক ফ্রেন্ড কে আমি সাইমুমের ভক্ত বানিয়ে ফেলেছি। আসলেই সাইমুম এমন একটা জিনিস সে যেই হোক একবার পড়লে তার ভালো লাগবেই। এই বই থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। কিন্তু আমার একটা জিনিস খারাপ লেগেছে সেটা হল ডোনার বাড়াবাড়ি করে সারার সাথে আহমেদ মুসার বিয়ে দেওয়া🙂। এটা দেখে আমার ছোট আপু সাইমুম পড়া ছেড়ে দেয়। কারন ও তাতিয়ানার পর ডোনাকেই সবচেয়ে বেশি পছন্দ করতো। আর আমার মতে একজন মানুষের এতগুলা বিয়ে কেমন জানি লাগে যদিও ইসলাম শরীয়ত অনুযায়ী করা যায়। তবুও এই দিক টা আমার একটু খারাপ লেগেছে শুধু আমার না আমার ফ্রেন্ডরাও বলছে। তারা আরো বলেছে সারা আহমেদ মুসাকে ভালোবাসে ঠিক আছে কিন্তু সে তো বিবাহিত। তার এইটা বুঝা উচিত ছিল যদিও এটা সত্য যে ভালোবাসা নিজের কথা মানে না তবে আমার মত ছিল আমেরিকার আহমেদ মুসার সবচেয়ে কাছের সাথী ছিল বেঞ্জামিন বেকন। তার সাথে সারা কে বেধে দিলে খারাপ হত না। যাইহোক স্যার যেটা ভালো মনে করেছিলেন সেটাই করছেন। আবুল আসাদ স্যার এর কাছে আমার একটাই আবেদন প্লিজ আপনি সিরিজটা শেষ করবেন না চালিয়ে যেতে থাকুন। আল্লাহ স্যারকে দীর্ঘজীবি করুক এই দোয়া করি.
৫.শেষ বিকেলের ট্
আড্রিয়াটিকের বেলাভূমি।
অস্তগামী সূর্যের সোনালী আলোয় বেলাভূমি একদম সোনার মতো ঝলমল করছে। একটু আগের একসাগর নীল পানিতে কেউ যেন টন টন তরল সোনা ঢেলে দিয়েছে। সঁন্ধা ছুই ছুই এই সময়টাতে সাগরমুখী হয়ে দাড়িয়ে আছে দুজন তরুণ-তরুণী। তরুণটি একসময় সাগরের দিক থেকে মুখ ঘুরিয়ে তরুণীর দিকে তাকালো। বললো, "কি ব্যাপার জেন? তোমাকে এমন বিষন্ন দেখাচ্ছে কেনো?" চকিতে একবার জেন জোয়ানের দিকে তাকালো৷ আবার সাগরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিলো। অনেকটা ভেজা আর ধীর কন্ঠে বললো, "তুমি নিজেও যথেষ্ট মন খারাপ করে আছো। সেটা এড়িয়ে যাচ্ছো কেনো?" "আসলেই আমার নিজের মনটাও খারাপ। কতো ঘটনা-দূর্ঘটনা ঘটে গেলো। জন্মভূমি থেকে পালিয়ে এসেছি। তারপরও আল্লাহ আমাদের জন্য যেটা দিয়েছেন সেটা পেয়ে আমার হারানো কিছুর জন্য কখনোই মন খারাপ হয়না। অথচ দেখো। আজকের দিনটিতে আমরা যা হারিয়েছিলাম সেটা কখনোই পূরণ হবার নয়।" জোয়ানের কণ্ঠস্বর মনে হলো অনেক দূর থেকে অস্পষ্ট ভাবে ভেসে আসছে। "কষ্টটা আরও বেশি লাগে এইজন্য যে তারপর আর লা গ্রিনজাতে ওর কবরটা একবারও দেখতে যেতে পারিনি। অথচ এই লা গ্রিনজাকে ঘিরেই জড়িয়ে আছে ওর সাথের কতশত শৈশব স্মৃতি।" জেনের ভেজা কণ্ঠ একসময় কান্নায় রুদ্ধ হয়ে থেমে যায়। জোয়ান পাশ ফিরে দুধাপ এগিয়ে এক হাত দিয়ে জড়িয়ে ধরে জেনকে। একটা অবলম্বন পেয়ে জেন যেন আরও ভেঙে পড়ে। জোয়ানের কাঁধের উপর মাথা রেখে হুহু করে কান্নায় ভেঙে পড়ে। নীরব অশ্রুর প্লাবন জোয়ানের গণ্ডদেশকেও প্লাবিত করে।
পল পল করে বয়ে চলে সময়।
এরই মাঝে সোনালী সূর্যটা কখন টুপ করে ডুব দিয়েছে। কোথা থেকে রাজ্যের কালি এসে মিশে যেন আড্রিয়াটিকের বিপুল জলরাশিকেও শোকের কালো রঙে সাজিয়ে দিয়ে গেছে।
বাতাসের ইথারে কেঁপে কেঁপে প্রশান্তিময় সুরের মধুর এক আবেশ ছড়িয়ে আইসিটিপির মসজিদ থেকে ভেসে আসে আজান।
মাগরিবের আজান। দিনের পাঁচ সময়ে পাঁচ আজানের ভাষা একদম এক হলেও ভিন্ন ধরনের, ভিন্ন স্বাদের পাঁচ রকম আবেদন নিয়ে রোজ হাজির হয়। মাগরিবের এই আজান নামাযের জন্য যেমন ডাক দেয় তেমনি ঘরে ফেরার এক আকুতিও সবার মধ্যে জাগিয়ে দিয়ে যায়। কর্মক্লান্ত সব মানুষ এই আজান শুনেই চমকে উঠে ভাবে, তাইতো৷ এবার ঘরে ফেরার সময় হয়েছে।
জেনের বাহুতে মৃদু চাপ দিয়ে জোয়ান বলে ওঠে, "চলো। ফেরা যাক।"
"হুম। মাগরিবের নামায পড়েই কিন্তু ফিলিপ ভাইয়া আর খালাম্মাকে ফোন দিতে হবে।" জেন জোয়ানের কাঁধ থেকে মাথা তুলে চলতে শুরু করে। চলতে শুরু করে জোয়ানও। পাশাপাশি হাটতে হাটতে নিজের মুঠোর মধ্যে জেনের হাতটা পুরে নিয়ে বলে ওঠে, "অবশ্যই।"
শেষ বিকেলের ট্
ফোকাসের বাইরের সাইমুম সাইমুম আমায় যা শিখিয়েছে পর্ব-১
সাইমুম পড়া শুরু করি অনেক অনেক আগ থেকে, সময় বয়ে যায় নিজের স্রোতে কখনো থেমে থাকেনা বয়সও থেমে থাকেনি, সেই ছোট্ট ফ্রক পরা খুকি থেকে আজ পূর্ণ যৌবনে উপস্থিত হওয়ার সাথে সাথে সাইমুমও আমায় সঠিক পথের দিশা রেখে প্রতি কদমে সাহায্য করে এতদূর এসেছে ।
সাইমুমের সাথে পথচলা শুরু কিন্তু সেই খুকি থেকেই, তখন থেকেই সাইমুমকে চিনি, ফারজানা, শিরি, হাসান তারিক, মাহমুদ, এহসান সাবরী, সাবেরা এরা আমার ছোট বেলার কল্পনার সাথী ।
চলার পথে সাইমুম আমায় কিছু খুব ভালো অভ্যাস উপহার দিয়েছে যার মধ্যে অন্যতম স্রষ্টার প্রতি অবিচল আস্থা ও বিশ্বাস । আমি এমন এক শহরে বড় হয়েছি যেখানে ঈশ্বরকে মানুষ মুখেও আনেনা, ঈশ্বর প্রতিটি জীবের অন্তরেই থাকেন কিন্তু তাকে মুখে নিয়ে স্বরণ করার জন্য যে আবহাওয়া দরকার তা আমি পরিবেশ থেকে পাইনি । পেয়েছি আমার পরিবার আর সাইমুম থেকে ।
অবাক হয়ে যেতাম যে কিভাবে একটা মানুষ এভাবে আল্লাহর প্রতি অবিচল আস্থা রাখতে পারে, যদিও ফিকশন এটা কিন্তু ফিকশন হলেও এর জন্য তো বাস্তব উপাদান থাকতে হবে সেটা ভেবেই আমি হয়রান হয়ে যেতাম আল্লাহর প্রতি আস্থা রেখে চলে কিভাবে?
নিজে যখন এটা প্রাকটিস করা শুরু করলাম আমার জীবন বদলে গেল, এখন কীবোর্ডের উপরে অশ্রু ঝড়ছে কেবল সেসব দিনের কথা ভেবে যে আমি ক্লাসে বুলিং এর স্বীকার হয়েছি কিন্তু মনে মনে বলেছি আমার আল্লাহ তো দেখেছেন, তিনি তো জানেন আমার কোনো দোষ ছিলো না । আমার মন হালকা হয়ে যেত ।
একা একা ঘুরতে গেলে ভয় পেলে ভাবতাম আমার সাথে তো ইব্রাহীমের প্রভূ আছেন, তিনি তো আমায় দেখে রাখছেন যেভাবে তিনি ইসমাইকে দেখে রেখেছিলেন । তিনি মহা শক্তিমান তার অসাধ্য কিছুই নেই ।
জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই এই অভ্যাসের ভালো প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছি ।
বই পড়ার অভ্যাস তৈরিতে সাইমুম আমায় কতটা সহযোগিতা করেছে তা ভাবলেও মাথা নুয়ে আসে ।
রাশিয়া পড়ুয়াদের দেশ, এখানে রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে মানুষ গল্প করার চেয়ে পড়তে ভালোবাসে কিন্তু এই অভ্যাস ছিলো না, আমি ছোটবেলায় অনেক কম পড়তে চাইতাম, শুনতে চাইতাম বেশি । আম্মিকে দিয়ে বই পড়াতাম আর শুনতাম, এর কারণ ও ছিলো আমি বাংলা আর রাশিয়ান বাদে পড়তে পারতাম না, বেশ দেরী করেই ইংরেজী শিখেছি আমি তারপরে ধীরেধীরে অন্য ভাষাগুলি শিখেছি । কিন্তু বাসায় বেশিরভাগ বই ছিলো ইংরেজীতে তারপরেই বাংলা একদম কম রাশিয়ান বই ছিলো, আম্মি রাশিয়ান পড়তে পারতেন না ভালোভাবে তাই বাসায় ওই বইগুলি কম থাকতো ।
একদিন দেখলাম আহমদ মুসা অনেক বেশি পড়ে তাই সে জানে, ব্যাস জিদ চেপে গেলো আমিও পড়বো তার মত, আমিও জানবো তার মত! সে পারলে আমি পারবো না কেন?
সেই যে বই পড়া শুরু! এখনো সে ধারা চলছে এবং স্পেনে ঘুরতে এসেও কয়েকটা বই পড়ে ফেলেছি স্প্যানিশ কালচার সিভিলাইজেশ্যন নিয়ে ।
অনেক শীত লাগছে এখন আর ব্লাংকেটের বাইরে থাকা যাবে না, আরেকদিন বাকি কথা লিখবো
মালাগা, স্পেন ।
২০২০-০২-১১
- Rashida Nazneen
|