যেসব খাবার খেলে রক্তে হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি হয়। হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ১০ টি খাবার

 

 রক্তে হিমোগ্লোবিন বাড়ানোর  খাবারের তালিকা।  হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধির ১০ টি খাদ্য


০১. সামুদ্রিক মাছ রক্তের হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধি করে

সামুদ্রিক মাছ বা অন্য খাবারে আপনি প্রচুর পরিমানে খনিজ উপাদান পাবেন সাথে আয়রন তো আছেই। তাই সমুদ্রের খাবার আপনার রক্তে  হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে।

০২. লাল চাল রক্তের জন্য উপকারি

 আমরা যে সাদা চাল এর ভাত খেয়ে থাকি তা মূলত কয়েকটি ধাপে চিকন করা এবং ঝালায় মালায় করা চাল। বলা যায় চালের মুল উপাদান টায় ফেলে দেওয়া হয় এই ঝালায় মালায় করতে গিয়ে। সাদা চিকন চাল দেখতে সুন্দর হলেও কাজে লাল চালের মত না।
লাল চাল দেখতে সাদার মত না আবার খেতেও একটু মোটা মোটা কিন্তু লাল চালেই উপকার বেশি।
লাল চালে আয়রন থাকে তাই এটিও আপনার রক্তের জন্য উপকারি।

০৩. পুর্ণশস্যজাতীয় খাদ্য রক্ত বৃদ্ধি করে

 গম, বার্লি, চাল এসব খাবার। পুর্ণশস্যজাতীয় খাদ্য তে প্রয়োজনীয় কার্বোহাইড্রেটস থাকে যা আমাদের দেহের জন্য প্রয়োজনীয়। 

০৪. বিনজাতীয় খাদ্যে রক্তের উপকার পাবেন

বিভিন্ন রকমের ডাল । ছোলা, সয়াবিন,কলাই ইত্যাদি।
এই জাতীয় খাবারেও আপনি আয়রন পাবেন। সাথে দেহের জন্য দরকারি অন্যান্য ভিটামিন তো আছেই।

০৫. ডিম রক্ত বৃদ্ধি করে

রোগ হয়েছে আর ডিম খেতে উপদেশ দেওয়া হইনি এমন অবস্থা মনে খুবই কম ই আছে।
ঠাণ্ডা লাগছে? জর হইছে? প্রেসার নেমে গেছে? দুর্বল লাগতিছে? সব সমস্যার এক খাবার "ডিম"
ডিমে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন ও আয়রন থাকে। বিশেষ করে ডিমের কুসুমে।
তাই রক্তের জন্য, পেশির জন্য, হাড়ের জন্য, যৌন দুর্বলতা কাটাতে নিয়মিত ডিম খান।

০৬. সবজি রক্তের হিমোগ্লবিন বৃদ্ধি করে

যদিও আমরা সবজি খেতে আকুপাকু করি কিন্তু এটা সবাই মানি সুস্থ থাকতে সবজির বিকল্প নেই।  আলু বেগুন বাধা কফি ফুল কফি টমেটো ইত্যাদি সবজি তে ভিটামিন এবং অন্যান্য পুষ্টিকর উপাদান আছে যা আপনার শরীর কে সুস্থ রাখতে এবং রক্তে হিমোগ্লোবিন ঠিক রাখতে হেল্প করে।

০৭. খেজুর দেহের জন্য অনেক পুষ্টিকর

প্রতিদিন একটা খেজুর খান। ভালো মানের খেজুর খাবেন, নইত উপকারের বদলে অপকার হয়ে জেতে পারে। টাকা খরচ হবে কিন্তু তাও ভাল খেজুর নিয়মিত খান। 

০৮.  হিমোগ্লোবিন বৃদ্ধিতে বাদাম খান

 বাদাম জাতীয় যেকোনো একটি বাদাম খাবেন রেগুলার। সেটা হতে পারে  কাজু বাদাম, হিজলি বাদাম, চীনা বাদাম কিংবা আখরোট। বাদাম শুধু আপনার রক্তের উপকার করে তা নয় , বাদাম আপনার দেহের অন্যান্য অংশের জন্যও উপকারি।
আমার জানামতে হাড় কিংবা পেশির উন্নতির জন্য বাদাম খেতে বলা হয়।

০৯. কিসমিস

 কিসমিস কিংবা শুকনো কোন ফল আপনার রক্তের হিমোগ্লোবিন এর পরিমান দ্রুত বাড়াতে সাহায্য করে। বিশেষ করে  অ্যাপ্রিকট বা খুবানি এবং খেজুর।

১০.  চকোলেট

 সব চকোলেট না কিন্তু। ডার্ক চকোলেট আপনার রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করবে। যদিও চকোলেট খেতে সবাই ই পছন্দ করে তাই এটা নতুন করে বলে দেওয়া লাগেনা যেমন বলা লাগে সবজি খেতে। তাও জানিয়ে রাখা যে চকোলেট ও আপনার দেহের জন্য উপকারি একটি খাবার। তবে মনে রাখবেন অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ তাই মেপে খাবেন।

আজ যাচ্ছি কিন্তু যাচ্ছি না , দেখা হবে নতুন কোন টিপস নিয়ে নতুন কোন দিনে।
সে পর্যন্ত ভাল থাকুন!!! 


হিমোগ্লোবিন হ্রাস মাত্রার আক্রান্ত ব্যক্তি আরও বেশি আয়রন সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে উপকৃত হতে পারেন। আয়রন হিমোগ্লোবিনের উত্পাদন বাড়াতে কাজ করে যা আরও বেশি রক্তের রক্তকণিকা গঠনে সহায়তা করে।

আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে:

  • মাংস এবং মাছ
  • টোফু এবং এডামামে সয়া পণ্যগুলি
  • ডিম
  • শুকনো ফল, যেমন খেজুর এবং ডুমুর
  • ব্রোকলি
  • সবুজ শাকসব্জী যেমন কালে এবং পালং শাক
  • সবুজ মটরশুটি
  • বাদাম এবং বীজ
  • বাদামের মাখন


ফোলেট গ্রহণ বৃদ্ধি

ফোলেট হ'ল এক ধরণের ভিটামিন বি যা হিমোগ্লোবিন উত্পাদনে একটি প্রয়োজনীয় ভূমিকা পালন করে। হিম উত্পাদন করতে শরীর ফোলেট ব্যবহার করে, হিমোগ্লোবিনের একটি উপাদান যা অক্সিজেন বহন করতে সহায়তা করে।
যদি কোনও ব্যক্তি পর্যাপ্ত ফোলেট না পান তবে তাদের লাল রক্ত ​​কোষগুলি পরিপক্ক হতে সক্ষম হবে না, যা ফোলেটের ঘাটতিজনিত রক্তাল্পতা এবং হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমিয়ে আনতে পারে ।
ফোলেট ভাল উত্স অন্তর্ভুক্ত:
  1. গরুর মাংস
  2. পালং শাক
  3. ভাত
  4. চিনাবাদাম
  5. কালো চোখের মটর
  6. কিডনি মটরশুটি
  7. অ্যাভোকাডো
  8. লেটুস

সর্বোচ্চ আয়রন শোষণ
খাবার বা পরিপূরকগুলিতে আয়রন গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ, তবে একজন ব্যক্তিরও তাদের দেহটিকে সেই আয়রনটি শোষিত করতে সহায়তা করা উচিত।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার যেমন সাইট্রাস ফল, স্ট্রবেরি এবং শাকসবুজ শাকসবজি আয়রন শোষণের পরিমাণ বাড়িয়ে তুলতে পারে। ভিটামিন সি পরিপূরক গ্রহণও সাহায্য করতে পারে।
ভিটামিন এ এবং বিটা ক্যারোটিন আয়রন শোষণ এবং ব্যবহারে শরীরকে সহায়তা করতে পারে।

ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবারগুলির মধ্যে রয়েছে:

  • মাছ
  • লিভার
  • স্কোয়াশ
  • মিষ্টি আলু
  • ক্যাল এবং কলার্ডস
বিটা ক্যারোটিনের উচ্চ খাবারগুলিতে হলুদ, লাল এবং কমলা ফল এবং শাকসব্জী অন্তর্ভুক্ত রয়েছে:
  • গাজর
  • মিষ্টি আলু
  • স্কোয়াশ
  • ক্যান্টালৌপস
  • আম
ভিটামিন এ পরিপূরকগুলি শরীরকে আয়রন প্রক্রিয়াজাত করতে সহায়তা করতে পারে, তবে ভিটামিন বেশি পরিমাণে গ্রহণ করা বিপজ্জনক।
অতিরিক্ত ভিটামিন এ হাইপারভিটামিনোসিস এ হিসাবে পরিচিত অবস্থার দিকে পরিচালিত করতে পারে যা হাড় এবং জয়েন্টে ব্যথা, গুরুতর মাথাব্যথা এবং মস্তিষ্কের মধ্যে চাপ বৃদ্ধি করার মতো লক্ষণগুলির কারণ হতে পারে।


আয়রন সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ

একজন চিকিত্সক অত্যন্ত নিম্ন স্তরের হিমোগ্লোবিনযুক্ত ব্যক্তিকে লোহার পরিপূরক গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন। ডোজটি কোনও ব্যক্তির স্তরের উপর নির্ভর করবে।
এটি লক্ষ করা গুরুত্বপূর্ণ যে খুব বেশি আয়রন বিপজ্জনক হতে পারে। এটি হিমোক্রোম্যাটোসিসের কারণ হতে পারে যা লিভারের রোগ হতে পারে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য , বমি বমি ভাব এবং বমি বমিভাবের মতো পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হতে পারে ।
পরিপূরকগুলি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ধীরে ধীরে লোহার স্তর বাড়িয়ে তুলবে। কোনও ডাক্তার শরীরের আয়রন স্টোর বাড়ানোর জন্য কয়েক মাস ধরে পরিপূরক গ্রহণের পরামর্শ দিতে পারেন।

কখন  বুঝবেন আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিন কম ? 

যখন কোনও পুরুষের রক্তে হিমোগ্লোবিনের প্রতি ডেসিলিটার (জি / ডিএল) এর চেয়ে কম 13.5 গ্রাম থাকে বা কোনও মহিলার যখন 12 গ্রাম / ডিএল- এর কম থাকে তখন লো হিমোগ্লোবিন নির্ণয় করা হয় ।

বিভিন্ন কারণে বিভিন্ন কারণে কোনও ব্যক্তির নিম্ন হিমোগ্লোবিন স্তর থাকতে পারে:

লোহার অভাবজনিত রক্তাল্পতা
গর্ভাবস্থা
লিভার বা কিডনিতে সমস্যা
দীর্ঘস্থায়ী রোগ
অন্তর্নিহিত কারণ ছাড়াই হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিকভাবে হ্রাস করা সম্ভব। কারও কারও কম হিমোগ্লোবিন থাকতে পারে এবং এর কোনও লক্ষণ বা ইঙ্গিত নেই

একজন চিকিত্সকের নির্দেশনায় একজন ব্যক্তি তাদের হিমোগ্লোবিনের মাত্রা স্বাভাবিক সীমার মধ্যে পড়তে বাড়াতে পারে। সাধারণ ব্যাপ্তিগুলি হ'ল:

পুরুষদের জন্য 13.5 থেকে 17.5 গ্রাম / ডিএল
মহিলাদের জন্য 12 থেকে 15.5 গ্রাম / ডিএল
বয়স অনুসারে বাচ্চাদের উপযুক্ত হিমোগ্লোবিনের মাত্রা পরিবর্তিত হয়। বাচ্চার হিমোগ্লোবিন স্তরের বিষয়ে যে কেউ উদ্বিগ্ন, তাকে একজন চিকিৎসকের সাথে কথা বলতে হবে।

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা খুব কম রয়েছে তাদের যদি অতিরিক্ত পরিমাণে চিকিত্সা গ্রহণ করা এবং ডায়েট পরিবর্তন করা পর্যাপ্ত ফলাফল না দেখায় তবে অতিরিক্ত চিকিত্সার প্রয়োজন হতে পারে।


হিমোগ্লোবিন কম হওয়ার নিম্ন স্তরের লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:

  1. একটি দ্রুত বা অনিয়মিত হৃদস্পন্দন
  2. ফ্যাকাশে ত্বক এবং মাড়ি
  3. ক্লান্তি
  4. পেশীর দূর্বলতা
  5. ঘন ঘন বা অব্যক্ত জখম
  6. মাথাব্যথা


রক্তাল্পতার সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:

আয়রন, ভিটামিন বি -12, বা ফোলেটের ঘাটতি
যথেষ্ট পরিমাণে রক্ত ​​হ্রাস
ক্যান্সারগুলি যা অস্থি মজ্জনকে প্রভাবিত করে যেমন লিউকেমিয়া
কিডনীর রোগ
যকৃতের রোগ
হাইপোথাইরয়েডিজম বা একটি থাইরয়েড গ্রন্থি যা পর্যাপ্ত হরমোন তৈরি করে না
থ্যালাসেমিয়া, একটি বংশগত রোগ যা হিমোগ্লোবিনকে সঠিকভাবে কাজ করতে বাধা দেয়
সিকেলের সেল অ্যানিমিয়া, একটি জিনগত ব্যাধি যা লাল রক্ত ​​কোষ এবং হিমোগ্লোবিন হ্রাস করতে পারে

হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কম হতে পারে:

ফুসফুসের রোগ
অতিরিক্ত ধূমপান
পোড়া
চরম শারীরিক অনুশীলন
Next Post Previous Post