হেফাজতে ইসলাম এর শফি হুজুরের জীবনী ও তেঁতুল বিতর্ক ও বাঙালি নাস্তিক মুরতাদদের জবাব
যে মানুষটার প্রচেষ্টার জন্য সকল নাস্তিক, সেক্যু শাহবাগীরা পিছু হটেছিল। যিনি সত্যিকার অর্থেই অফলাইনে রুখে দিয়েছিলেন সেক্যুদের সকল অপচেষ্টা। তার মৃত্যুতে তারা খুশিই হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তারপরও মাতল ধরেছে নাস্তিকপাড়ায়। মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একদিকে যেমন বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে অপপ্রচার করতে চাইছে সেক্যুলাঙ্গার মিডিয়াগুলো, অপরদিকে বিভিন্ন কটুক্তিও করে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে এই মানুষটার চেয়ে বেশী ট্রলের শিকার কেউ হন নি। ২০১৩ সালে এই মানুষটার নেতৃত্বেই হাজারো আলেম হেফাজতের ব্যানারে নাস্তিক ও মুরতাদদের বিরুদ্ধে একযোগে রাস্তায় নেমেছিল। বাংলাদেশে আজকে তরুণদের দ্বীনের ব্যানারে আসার যে জোয়ার শুরু হয়েছে এর পেছনে হেফাজতের সেই মুভমেন্ট প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষ ভাবে প্রভাব সৃষ্টি করেছিল।
যদিও বয়সে ভারে নুয্য হওয়ায় এবং কু সন্তানের প্রভাবে বেশকিছু ভুল সিদ্ধান্ত তাঁকে অনেক সময় নিতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, তিনি দেশের প্রবীণ আলেম হওয়ায় এবং অন্যান্য আলেমরাও তাঁকে পূর্ণাঙ্গ নেতার সম্মান দেয়ায় সরকার এবং নানা রাজনৈতিক দলও সবসময় তাঁকে নিজেদের বলয়ে রাখার চেষ্টা করেছিল। ফলে প্রায়সময় তাঁকে যেমন সমালোচিত হতে হয়েছিল দেশের জনগনের কাছে, ঠিক তেমনি আলেমরাও তাঁর সিদ্ধান্তের ভুল নিয়ে অনেক কথা বলেছেন।
আলহামদুলিল্লাহ্, আমরা এমন এক দ্বীনের অনুসরণ করি যে দ্বীন হলো জবাবদিহিতার দ্বীন। দীর্ঘদিন ধরে হাটহাজারী সহ বেশ কিছু বিষয়ে হযরতকে কাজে লাগিয়ে তাঁর কু সন্তান বিভিন্ন অপরাধ কর্ম করে এসেছিলেন। আপনারা লক্ষ করবেন, আলেমরা গত দুদিন তাঁর কু সন্তান আনাসের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন করেছেন। হযরত গতকালই এর জবাবে পূত্রকে বহিষ্কার করেন এবং নিজেকেও মুহতামিম এর পদ থেকে অব্যাহতি দেন। এটাই ইসলামের শিক্ষা যে, জবাবদিহিতার মাধ্যমেই শাসক এবং নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিদেরকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের আহ্বান করতে হয়। সত্যিকারভাবে বাংলার সাধারণ মানুষ এবং আলেমদের রাহবারই ছিলেন তিনি। দেশের প্রবীণ মুরুব্বী হিসেবে তাঁর দোয়া এবং উপস্থিতি জনগনের জন্য বারাকাহপূর্ণ ছিল। সাধারণ জনগন তাঁকে ভালোবাসতেন মনে প্রাণে। অথচ আজ মানুষটি চলে গেলেন রবের সান্নিধ্যে। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন। আল্লাহ তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউসে নসীব করুক।
জেনারেল লাইন থেকে দ্বীনের পথে চলমান এই আমিও সাক্ষ্য দিচ্ছি হেফাজতের সেই মুভমেন্ট ২০১৩ সালে আমার ঈমানকে নতুন ভাবে জাগিয়ে তুলেছিল। নাস্তিক মুরতাদের বিরুদ্ধে সেই ১৩ দফার সাথে আমরাও একাত্ম ছিলাম। বাংলাদেশে তারুণ্যের ইসলামের গতিপথ চেঞ্জ করা সেই মুভমেন্টের আমীর মাওলানা আহমদ শফী (রাহিমাহুল্লাহ)-কে যেন আল্লাহ এই ভালো কাজ গুলোর উসিলায় মাফ করে দেন, তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসীব করেন।
- Abu Mus'ab
আল্লামা আহমদ শফী রহ. এর মৃত্যুতে হাটহাজারীর ছাত্রদের পক্ষ থেকে শোক বার্তা ; চলমান পরিস্থিতিতে সারা দেশের কওমী মাদরাসার ছাত্রভাই ও দেশবাসীর প্রতি আমাদের আহবান।
আল্লামা আহমদ শফী রহ. এর মৃত্যুতে গভীর শোক ও সমবেদনার সাথে আল্লাহ তা'য়ালার দরবারে আমরা হযরতের মাগফিরাত কামনা করছি।
সে সাথে ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমরা অত্যন্ত সংক্ষোভের সাথে লক্ষ্য করছি যে, আল্লামা আহমদ শফী' রহ. এর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে একটি মহল ঢাকায় কু-রাজনীতি করার চেষ্টা করছে। এ চিহ্নিত গোষ্ঠিটি ছাত্র সমাজের অপরিচিত নয়। এ লোকগুলোই দীর্ঘ কয়েকবছর যাবত আল্লামা আহমদ শফী রহ. কে ব্যবহার করে বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা গ্রহণ করে আসছিলো এরাই হাটহাজারী মাদরাসা এবং সমগ্র কওমী অঙ্গনকে জিম্মি করে রেখেছিলো। আজ পুরো জাতি পরিতাপের সাথে লক্ষ্য করছে যে, এ চক্রটি লজ্জাজনক ভাবে আল্লামা আহমাদ শফী'র মৃত্যুকে নিয়েও রাজনীতির ফন্দি আটছে।
আমরা পূর্ণ দায়িত্ব ও সততার সাথে স্পষ্ট বলছি যে, হাটহাজারীতে আন্দোলন চলাকালীন পুরো সময়ে আল্লামা আহমদ শফী' রহ. যথাযথ সম্মান ও নিরাপত্তার সাথেই তার কার্যালয়ে অবস্থান করেছেন। এ সংক্রান্ত তথ্য ও প্রমাণ জাতির সামনে উপস্থাপন করতে ছাত্র সমাজ প্রস্তুত আছে।
আল্লামা শফী' রহ. এর কার্যালয় সংলগ্ন কয়েকটি রুম এবং মাদরাসার শৃঙ্খলা ভঙ্গকারী কয়েকজন শিক্ষকের রুমে উত্তেজিত ছাত্রদের দ্বারা সাময়িক কিছু শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। ছাত্রদের সাময়িক সংক্ষোভের পিছনেও আল্লামা আহমাদ শফী' রহ. কে ব্যবহারকারী চিহ্নিত এ গোষ্ঠীটির প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ এবং হঠকারীতাই দায়ী।
ছাত্রসমাজ দ্ব্যার্থহীনভাবে ঘোষণা করছে যে, এ চিহ্নিত মুনাফিক গোষ্ঠিটি যদি আল্লামা আহমাদ শফী রহ. এর মৃত্যুজনিত শোককে ব্যবহার করে কোনো রাজনৈতিক হীনস্বার্থ আদায়ের চেষ্টা করে তাহলে সারাদেশের কওমী মাদরাসার ছাত্ররা তাদেরকে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাধ্য হবে। বাংলাদেশের সমস্ত কওমী মাদরাসায় এদেরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হবে এবং এদের নিয়ন্ত্রনাধীন মাদরাসাগুলোকেও বয়কট করা হবে।
ঢাকার ছাত্রভাইদের প্রতি আহবান থাকবে আপনারা সজাগ দৃষ্টি রাখুন। মুহতারাম আল্লামা আহমাদ শফী রহ. মৃত্যুকে কোনো গোষ্ঠী নোংরা রাজনীতির পুঁজি বানাতে চাইলে আপনারা শক্ত হাতে এদেরকে প্রতিরোধ করুন।
হাটাহাজারীর ছাত্রদের পক্ষে -
𝑼𝒔𝒂𝒎𝒂 𝑴𝒖𝒉𝒂𝒎𝒎𝒂𝒅
শোকে মুহ্যমান হাটহাজারী; সজীবতা ফিরিয়ে আনার দায়িত্বে যারা:
মুহতামিমের কার্যাবলী পরামর্শ ভিত্তিক পরিচালনা করবেন তিন সদস্যের সমন্বয়ে একটি কমিটি:
১। মুফতী আব্দুস সালাম চাটগামী সাহেব হাফি.
২। মাওলানা শেখ আহমদ সাহেব হাফি.
৩। মাওলানা ইয়াহয়া সাহেব হাফি.
জামিয়ার শায়খুল হাদীসের (শায়েখে আউওয়াল) আসন অলঙ্কৃত করবেন আল্লামা হাফেজ জুনায়েদ বাবুনগরী হাফি. পাশাপাশি নাজেমে তা'লীমাত (শিক্ষাসচিব) হিসাবেও দায়িত্ব পালন করবেন তিনি।
আজ ১৯ শে সেপ্টেম্বর রোজ শনিবার বিকালে দীর্ঘ সময় মজলিসে শূরা এবং জামিয়ার সিনিয়র আসাতিযায়ে কেরামের উপস্থিতিতে উক্ত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়। এবং আন্দোলন চলাকালীন দু'দিনের শূরায় আনাস ও নূরুল ইসলাম জাদীদের বহিষ্কার সহ যে সব সিদ্ধান্ত হয়েছিল তাও বহাল রাখা হয়েছে।
উক্ত বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন :
১। আল্লামা মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী হাফি.
২। আল্লামা নূরুল ইসলাম জিহাদী হাফি.
৩। আল্লামা নোমান ফয়েজী হাফি.
৪। মাওলানা সালাউদ্দীন নানূপুরী হাফি.
৫। মাওলানা সুহাইব সাহেব হাফি.
৬। মাওলানা ওমর ফারুক হাফি.
সহ জামিয়ার সিনিয়র শিক্ষকবৃন্দ।
আল্লাহ তা'য়ালা উম্মুল মাদারিস হাটহাজারীর রওনক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করে দিন এবং সব ধরনের ফেতনা-ফাসাদ থেকে হেফাজত রাখুন। আমীন।
𝑼𝒔𝒂𝒎𝒂 𝑴𝒖𝒉𝒂𝒎𝒎𝒂𝒅
দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান:
হাটহাজারীতে উপস্থিত তৌহিদি জনতা সহ গোটা দেশবাসীর কাছে অনুরোধ, শান্ত থাকুন, শত্রুর ফাঁদে পা দিবেননা। ওরা গুজব রটাচ্ছে আমাদেরকে সচেতন হতে হবে, আবেগ নিয়ন্ত্রন করুন। আল্লামা আহমদ শফী রহ. এর আখেরী বিদায় সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করুন।
মুনাফিকরা বিভ্রান্তিকর পোষ্ট দিচ্ছে আবার সরিয়ে নিচ্ছে, আবার একটু পরপর ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছে এমন বহুরূপী কর্মকান্ড গতকাল থেকে চলছে।
আমার বিগত কোন পোষ্টে নৈতিক অবস্থান দূর্বল নয়।
আমার পোষ্ট আআত্মরক্ষামূলক আন্দোলনের কৌশলে শর্তজুড়ে দেয়া ছিলো, শর্ত পাওয়া যায়নি কোথাও মাশরুতের তো প্রশ্নই আসেনা।
তা ছাড়া হুজুরের নাতি আরশাদের সুস্পষ্ট বক্তব্য রয়েছে "আমার দাদুকে (আল্লামা অাহমদ শফী রহ.) হাসপাতলে নেয়ার সময় আমি সাথে ছিলাম ৷ তখন কোনো ধরনের সংঘাতের ঘটনা ঘটেনি ৷ সব আমার চাচা আনাস সাহেবের বানোয়াট কাহিনী ৷
-(হুজুরের বড় নাতী মাওলানা আরশাদ)
আর আন্দোলনের দাবী আদায় হওয়ার পর হুজুরকে কষ্ট দেয়ার মতো জঘণ্য কাজ অন্তত আমাদের পক্ষে দূরতমভাবেও কল্পনা করা যায়না।
আন্দোলন চলাকালীন পুরোটা সময় হাজার হাজার ছাত্র স্বাক্ষী রয়েছে অতএব অতিভক্তি দেখিয়ে কতিপয় কুচক্রী যারা ফেতনা ছড়াতে চায় তাদেরকে চিনে রাখুন। এসবে না জড়িয়ে আল্লামা আহমদ শফী রহ. এর শেষ বিদায়কে সুন্দর ও সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে সবাই সহায়তা করুন।
এতো বড় মজমা আমাদের পক্ষে নিয়ন্ত্রন সম্ভব নয়। আজকের দিনে কেউ কোন উস্কানিমূলক শ্লোগান মাঠে দিবেননা দয়া করে।
𝑼𝒔𝒂𝒎𝒂 𝑴𝒖𝒉𝒂𝒎𝒎𝒂𝒅