সিরিয়া যুদ্ধঃ পুতিনের বোমা হামলায় মা বাবা হারানো সিরিয়ার এতিম মুসলিম শিশুরা কেমন আছে?

সিরিয়া যুদ্ধঃ পুতিনের বোমা হামলায় মা বাবা হারানো সিরিয়ার এতিম মুসলিম শিশু

  1. সিরিয়া যুদ্ধ ২০২৪
  2. সিরিয়া যুদ্ধের ছবি
  3. সিরিয়ার বর্তমান অবস্থা ২০২৪

সিরিয়ার এতিম শিশুরা কেমন আছে?

আমি যদি বলি এই শিশুদের কী অপরাধ তাহলে অনেকে বলবে সন্ত্রাসীদের পক্ষ নিয়েন না!

তুরস্কর "সেরাব্লাস" নামক এক মহিলা সাংবাদিক কয়েকদিন আগে সিরিয়ার এতিমখানায় গিয়েছিলেন তারপর তিনি একটি আর্টিকেল লেখেন, সেখানে তিনি উল্লেখ করেন:

"প্রায় তিন ঘন্টার মতো যাত্রা করে আমরা সিরিয়ার একটি এতিমখানায় পৌছাইলাম তখন সময় মধ্যরাত সবাই ঘুমানোর ব্যস্ততায় রয়েছে।

সিরিয়া যুদ্ধ

প্রথমে যেই বিষয়টা লক্ষ্য করলাম সেখানে দেখলাম দুমাসের একজন বাচ্চা জায়েদ নামে যে মাটিতে শুয়ে ছিল, সে এমনভাবে ঘুমোচ্ছে যেন তাকে ডেকে উঠানো সম্ভব না, বিষয়টা দেখে নিজের অজান্তেই কান্না চলে আসলো, আর আমি সারারাত জায়েদের পাশে'ই ছিলাম।

যে ভদ্রমহিলা যায়েদের দায়িত্ব নিয়েছিল তিনি তাকে নিজ সন্তানের মতোই আদর যত্ন করেন।
আশেপাশে ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে অনেক শিশু ছিল যারা গ্যাসের ব্যথায় অনেকেই ঘুমাচ্ছে না, বৃদ্ধ এবং মধ্যবয়সী মহিলারাও একই রকম।

তবে তারা কান্নাকাটি করে না, ঘুমানোর চেষ্টা করে এবং অন্যকে বিরক্ত করে না।
সেখানে অনেক এতিম ছিল এবং তারা কতইনা নিঃসঙ্গ ছিল।

এই এতিমখানায় তাদের নিজস্ব কিছু নেই, অন্যান্য বাচ্চাদের সাথে তারা সাধারণ।
এবং এই বাচ্চারা কখনও কাঁদেনি; দেখে মনে হয়েছিল যুদ্ধের সমস্ত বোঝা তারা কাঁধে নিয়ে ফেলেছে।

সকালবেলা যখন ফজরের আযান দেওয়া হলো, সকলকেই নামাজের জন্য প্রস্তুতি নিলো এমনকি চার বছর থেকে উপরে সব শিশুরা তারা সকলেই নামাজ পড়লো এবং একসাথে প্রার্থনা করল,
এর পর আবার ঘুমাতে গেল।

আমরা বাচ্চাদের মাথার কাছে খেলার পুতুল এবং খেলনা গাড়ি গুলো রেখেছিলাম, যখন আলো ছড়িয়ে পড়লো তারা ঘুম থেকে উঠল, যখন তারা খেলনা গুলো দেখতে পেল তখন তারা খুবই আনন্দে ছিল।

আমাদের দেখে কিছুটা দ্বিধাগ্রস্থ ছিল এবং আমাদের কাছে আসতে চাচ্ছিল না কিন্তু যখন জানতে পারল যে আমরা এই গুলো নিয়ে আসেছিএবং আমরা তাদের ভালোবাসি তারা আমাদের কাছে আসলো এবং মুহাম্মদ নামক পাচ বছর বয়সী এক শিশু আমার কলে বসলো।

জায়েদ নামক দুই মাসের শিশুটি জেগে উঠল এখনো সে কোন কান্না করছে না, যেন কান্না করা তার কোন অধিকার নেই, সে খাচ্ছিল মনে মনে ভাবছিলাম সে যদি তার মায়ের দুধের স্বাদ পেতো তাহলে কতই না ভালো হতো!

একপর্যায়ে আমি তাঁদের আনন্দের জন্য কার্টুন দেখানো শুরু করলাম, একটি কার্টুনের মধ্যে একটা শিশু তার মা বাবাকে জড়িয়ে ধরল এটা দেখে সেখানে থাকা এতিম শিশুগুলো কান্না শুরু করল আমি ভিডিও বন্ধ করে দিলাম বাস্তবতা হচ্ছে আমিও কান্না থামাতে পারলাম না"

সিরিয়ায় এমন এতিম শিশু রয়েছে প্রায় দুই কোটি'র মত, সরকারি হিসাব অনুযায়ী নয় মিলিয়ন।
প্রশ্ন হচ্ছে এই শিশুদের কী অপরাধ??
- Abu Saleq
Next Post Previous Post