প্রাণীকুলের প্রতি যত্নবান বিশ্বনবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও আমাদের বর্বরতা | প্রাণী প্রেমি পশুরা এখন চুপ কেন?
দশম রমজান, ৮ম হিজরিতে প্রায় দশ হাজার সৈন্য নিয়ে আল্লাহ্র রাসুল ﷺ মক্কা অভিমুখে মার্চ করলেন।
মিত্র গোত্রসমূহের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সৈন্যও এতে অংশ নিয়েছিল। ইসলামের ইতিহাসে এরচে' বৃহৎ কোনও সামরিক সৈন্য সমাবেশ এর আগে কখনো হয় নি।
মিত্র গোত্রসমূহের পক্ষ থেকে বেশ কিছু সৈন্যও এতে অংশ নিয়েছিল। ইসলামের ইতিহাসে এরচে' বৃহৎ কোনও সামরিক সৈন্য সমাবেশ এর আগে কখনো হয় নি।
আল্লাহ্র নবী ﷺ পথিমধ্যে দেখলেন, একটা সদ্য প্রসূতা কুকুর এর ছানাগুলোকে দুধ পান করাচ্ছে।
তাঁর (ﷺ) আশঙ্কা হলো, কুকুরছানাগুলো পদদলিত হয়ে মারা পড়তে পারে
তাঁর (ﷺ) আশঙ্কা হলো, কুকুরছানাগুলো পদদলিত হয়ে মারা পড়তে পারে
কারণ দশ হাজারের একটা বিশাল সেনাদল। যাতে কেবল পদাতিকই নয় বরং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অশ্বারোহী এবং উষ্ট্রারোহী সৈন্যদলও সঙ্গে রয়েছে।
তাই তিনি জুয়াইল বিন সুরাকা আল দামরি রা. কে নির্দেশ দিলেন যতক্ষণ না সম্পূর্ণ বাহিনী এই স্থান অতিক্রম করে তিনি যেন ততক্ষণ এই কুকুর এবং ছানাদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য পাহারায় থাকেন।
পৃথিবীর কোনও সেনাদল ক'টা কুকুরছানার কোনও তোয়াক্কাই করত না। আমরাও খুব বেশি মানবিক হলে হয়ত পথ থেকে বড়োজোর কুকুরগুলোকে তাড়িয়ে দিতাম।
কিন্তু দয়ার বিমূর্ত প্রতীক সেই মহান নবী ﷺ সদ্যপ্রসূতা দূর্বল কুকুরটি কিম্বা দুগ্ধপায়ী ছানাগুলোকে ঐ অবস্থায় সরিয়ে দিতে চান নি।
তিনি মাত্র ক'টা কুকুরছানার দুধপান নিশ্চিত করতে একজন মিলিটারি ট্রাফিক কন্ট্রোলার পোস্ট করেছিলেন।
তিনি মাত্র ক'টা কুকুরছানার দুধপান নিশ্চিত করতে একজন মিলিটারি ট্রাফিক কন্ট্রোলার পোস্ট করেছিলেন।
কেবল তাই নয়, বরং এমন একজনকে সেই দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছিল- যাঁর ঈমানের দৃঢ়তা ও ইসলামের উপর মজবুতির ব্যাপারে খোদ আল্লাহ্র নবী ﷺ প্রকাশ্যে সাক্ষ্য দিয়েছেন এবং তাঁকে 'বিশ্বস্ত' বলে অভহিত করেছিলেন।
- নবীজির চরিত্র
- মহানবীর গুণাবলী
- মহানবী সম্পর্কে রচনা
- নবীজির ক্ষমা
আব্দুল্লাহ ইবনে জাফর রা. এঁর সূত্রে ইমাম আহমাদ এবং আবু দাউদ রহ. বর্ণনা করেন,
'একবার আল্লাহ্র রাসুল ﷺ একজন আনসারি সাহাবির বাগান অতিক্রম করছিলেন। বাগানে বাঁধা একটা উটকে কাঁদতে দেখে তিনি নিজ হাতে উটের চোখের পানি মুছে দেন।'
এরপর মালিকের খোঁজ করে তাঁকে নির্দেশ দেন, তোমরা তোমাদের গৃহপালিত প্রাণীসমূহের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো।
ভাবা যায়! সর্বশ্রেষ্ঠ নবী এবং তদানীং সেই রাষ্ট্রটির সর্বাধিনায়ক একটা উটের চোখের পানি মুছে দিচ্ছেন। মালিককে খুঁজে আনার আগ অবধি অপেক্ষা করছেন।
ভাবা যায়! সর্বশ্রেষ্ঠ নবী এবং তদানীং সেই রাষ্ট্রটির সর্বাধিনায়ক একটা উটের চোখের পানি মুছে দিচ্ছেন। মালিককে খুঁজে আনার আগ অবধি অপেক্ষা করছেন।
আহা! কী দয়া পৃথিবীর প্রতিটি প্রাণীর প্রতি। আল্লাহ্ তো বলছেনই,
وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلَّا رَحْمَةً لِّلْعَالَمِينَ
'আমি তো আপনাকে সমগ্র পৃথিবীর জন্য দয়া স্বরূপই প্রেরণ করেছি।'
বুখারী ও মুসলিমের সূত্রে বর্ণিত আছে- আব্দুল্লাহ ইবনে উমার রা. বলেন,
'অবশ্যই আল্লাহ্র রাসুল ﷺ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন। যারা কোনও জীবিত প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তুতে ( Target, of one's marksmanship) পরিণত করে।'
'অবশ্যই আল্লাহ্র রাসুল ﷺ তাদের প্রতি অভিসম্পাত করেছেন। যারা কোনও জীবিত প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তুতে ( Target, of one's marksmanship) পরিণত করে।'
অর্থাৎ কোনও প্রাণীর প্রতি অনর্থক কষ্টদানকারীকে আল্লাহ্র রাসুল ﷺ অভিশাপ প্রদান করেছেন।
তিনি (ﷺ) পূর্ববর্তী একজন নবীর একটি ঘটনা উদ্ধৃত করে উম্মতকে শিক্ষা অর্জনের জন্য শুনিয়েছেন। তিনি বলেন,
তিনি (ﷺ) পূর্ববর্তী একজন নবীর একটি ঘটনা উদ্ধৃত করে উম্মতকে শিক্ষা অর্জনের জন্য শুনিয়েছেন। তিনি বলেন,
'একটা পিঁপড়া একবার একজন নবীকে কামড়ে দিলো। তিনি পিঁপড়ার ঢিপি (বাসা) ভেঙে দেবার নির্দেশ দিলেন।
আল্লাহ্ সেই নবীর কাছে ওহী প্রেরণ করলেন- 'আপনি একটা পুরো সম্প্রদায়কে কেবল একটা পিঁপড়ার জন্য ধ্বংস করে দিতে চান?'
আল্লাহ্ সেই নবীর কাছে ওহী প্রেরণ করলেন- 'আপনি একটা পুরো সম্প্রদায়কে কেবল একটা পিঁপড়ার জন্য ধ্বংস করে দিতে চান?'
সামান্য পিঁপড়ার বিষয়েও আল্লাহ্ তো একজন নবীর প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।
অথচ আমরা! আল্লাহ্র রাসুল ﷺ কিয়ামত পর্যন্ত আগত উম্মতকে নির্দেশ দিচ্ছেন, প্রাণীকুলের প্রতি যত্নবান হওয়ার।
নতুবা আল্লাহ্র অবধারিত শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার ধমকিও দিয়েছেন।
অথচ আমরা! আল্লাহ্র রাসুল ﷺ কিয়ামত পর্যন্ত আগত উম্মতকে নির্দেশ দিচ্ছেন, প্রাণীকুলের প্রতি যত্নবান হওয়ার।
নতুবা আল্লাহ্র অবধারিত শাস্তির মুখোমুখি হওয়ার ধমকিও দিয়েছেন।
অথচ জন্তু তো বটেই মানুষের প্রতিও বর্বরতায় ঘাটতি নেই আমাদের।
উৎসাহের সাথে রুটির ভেতর ব্লেড দিয়ে ক্ষুধার্ত কুকুরগুলোকে হত্যা করা হয়।
অকারণে প্রাণীগুলোকে নির্মমভাবে পেটানো হয়। বন-বাঁদারের প্রাণীগুলোও রক্ষা পায় না!
উৎসাহের সাথে রুটির ভেতর ব্লেড দিয়ে ক্ষুধার্ত কুকুরগুলোকে হত্যা করা হয়।
অকারণে প্রাণীগুলোকে নির্মমভাবে পেটানো হয়। বন-বাঁদারের প্রাণীগুলোও রক্ষা পায় না!
অথচ প্রাণীর প্রতি দয়াপরবশ হওয়াটা এই দ্বীনের অংশ।
আফসোস! সেই দিনের জন্য, যে দিন তিল তিল করে প্রতিটি কাজের, প্রতিটি মূহুর্ত এবং সমস্ত কিছুর হিসেব দিতে হবে।
আফসোস! সেই দিনের জন্য, যে দিন তিল তিল করে প্রতিটি কাজের, প্রতিটি মূহুর্ত এবং সমস্ত কিছুর হিসেব দিতে হবে।
- Arju Ahmed